বিজ্ঞাপন : বিগত ৩রা এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস সহ অন্যান্য পত্রিকা ও অনলাইনে আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসা “ নিজের নিয়োগ কর্তা নিজেই ” শিরোনামে সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমি এ বিষয়ে দু’টি কথা বলতে চাই ? আমি বিগত ২৭/১১/১৯৯৩ইং তারিখ আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসা (ভারপ্রাপ্ত) সুপার পদে দায়িত্ব গ্রহণ করি। তখন মাদরাসাটি দাখিল পর্যন্ত ছিল। দায়িত্ব গ্রহণকালীন একাধারে ০৩ (তিন) বছর মাদরাসার পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ছিল শূন্য। ১৯৯৫ইং সালে দাখিল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে পরীক্ষার পাশের হার সন্তোষজনক হারে উন্নীত হওয়ায় ১৯৯৫ইং সালেই আমার দায়িত্বে মাদরাসাটিতে আলিম শ্রেণি খোলা হয় । দাখিল, আলিম ও ফাযিল পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালে ফাযিল স্নাতক (বি.এ) শ্রেণি খোলা হয়। বর্তমানে মাদরাসাটিতে কামিল (এম.এ) শ্রেণি খোলার জন্য ইসলামী আরবি বিশ^বিদ্যালয়, ঢাকায় প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম আরসিডিএস,পিএসসি (অব) এমপি মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মহোদয় নান্দাইল উপজেলায় কামিল (এম.এ) শ্রেণি খোলার জন্য আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসাটি নির্বাচিত করেছেন। বর্তমানে মাদরাসাটিতে প্রায় ১০০০ (এক হাজার) ছাত্র/ছাত্রী অধ্যয়নরত।
ক) আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কে ও তার পরিচয় :-
অভিযোগকারী জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম ছাত্র অভিভাবকের পরিচয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন। তিনি বর্তমানে কোন ছাত্র,ছাত্রীর অভিভাবক নন। তার কোন ছেলে-মেয়ে এ মাদরাসায় ভর্তি নেই। অভিযোগকারী অভিযোগের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে ছাত্র অভিভাবকের পরিচয়ে অভিযোগ দাখিল করেছেন । প্রকৃত পক্ষে জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম অত্র মাদরাসার একজন অফিস সহকারী ছিলেন। তার অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি ১১/০৯/২০০৬ইং তারিখ এক অফিস আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। গত ০৮/০২/২০০৭ ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটি সভায় উপস্থিত হয়ে তার কৃত অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরবর্তী সময়ে এরূপ ঘটনার পুনরাবৃতি ঘটবেনা বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করায় মানবিক কারণে ম্যানেজিং কমিটি তার সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহার করে তার চাকুরী নিয়মিত করেন। অত্র আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসায় দাখিল,আলিম ও ফাযিল পরিক্ষার কেন্দ্র থাকায় অফিস সহকারী হিসেবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্য তার নিকট পরিক্ষার অলিখিত মূল ও অতিরিক্ত খাতা প্রদান করা হলে সকল প্রকার বিশ^স্ততা ভঙ্গ করে পরিক্ষার্থীর সহিত গোপন চুক্তিতে লিখিত ও অলিখিত অতিরিক্ত খাতা পাচার ও পরিক্ষার্থীদের মূল খাতায় সংযোজনের অপরাধে তাকে বিগত ৩১/০৩/২০১০ইং তারিখ পরীক্ষার সকল দায়-দায়িত্ব হতে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি প্রদান করা হয় । বিগত ২৩/০৯/২০১০ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সভায় জনাব আনোয়ারুল ইসলাম অফিস সহকারী পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় কর্তব্য কাজে অবহেলা কৃর্তপক্ষের অবাধ্যতায় পেশাগত অসদাচরণ পাবলিক পরিক্ষার শৃঙ্খলাভঙ্গ ইত্যাদি কারণে ১১/০৬/২০০৬ ইং তারিখের সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি পূনরায় বহাল করে অফিস আদেশ জারি করা হয়। ১৩/০৫/২০১২ইং তারিখ গঠিত অভিযোগ তদন্ত কমিটির ২৮/০৫/২০১২ইং তারিখ দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন ০৫/০৬/২০১২ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সভায় অনুমোদন লাভ করায় তাকে ০১/০৬/২০১২ইং তারিখ হতে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করে অফিস আদেশ জারি করা হয়। জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে চূড়ান্ত বরখাস্তের বিরুদ্ধে জেলা ময়মনসিংহে ঈশ^রগঞ্জ নান্দাইল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১২৭/২০১২ । মামলাটি দীর্ঘ ৬ বৎসর পরিচালনার পর বাদী জনাব আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমূহ আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় দুতর্ফা সূত্রে বাদী মোঃ আনোয়ারুল ইসলামের প্রতিকূলে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়। উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে তিনি জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ জেলা জজ বাহাদুর আদালতে আপীল করেন। মামলা নং ১২২/২০১৭ অন্য আপীল। উক্ত মামলা ১৪/০২/২০১৯ তারিখ বিজ্ঞ জেলা জজ বাহাদুর খারিজ করেন। উক্ত খারিজের বিরুদ্ধে জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে সানি করেন। ছানি মামলা নং ৩৫/২০১৯ । দীর্ঘ চার বৎসর যাবত ছানি মামলা শুনানী না করায় গত ১১/০৯/২০২২ তারিখ বিজ্ঞ ১ম যুগ্ম জেলা জজ বাহাদুর মামলাটি খারিজ করে দেন। জনাব মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সাহেব নিজের দায়েরকৃত মামলা দোষি সাব্যস্ত হয়ে চাকুরীচ্যুত হওয়ায় ক্রোব্দ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনয়ন করিয়া আসিতেছে।
খ) পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, নিজের নিয়োগ কর্তা নিজেই : এ বিষয়ে আমার বক্তব্য ঃ-
১৯৯৫ সনের মাদরাসার জনবল কাঠামো সম্পর্কিত গেজেট প্রকাশের পূবেই ১৯৭৯ সনের বিধি বিধান অনুযায়ী ২/৭/১৯৯৫ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নান্দাইল,ময়মনসিংহ মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে বিগত ১০/০৭/১৯৯৫ইং তারিখ দৈনিক স্বদেশ সংবাদ পত্রিকায় সুপার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ১৬/০৭/১৯৯৫ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সভায় সুপার পদে নিয়োগ প্রদানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার নান্দাইল,ময়মনসিংহকে নিয়োগ কমিটির সভাপতি করে ০৬ (ছয়) সদস্যের নিয়োগ কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত নিয়োগ কমিটিতে আমার কোন সদস্য পদ ছিল না । উক্ত কমিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নান্দাইল ,ময়মনসিংহের সভাপতিত্বে ডিজি মহোদয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ২৪/০৯/১৯৯৫ইং তারিখ নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করেন এবং নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ০২/১০/১৯৯৫ইং তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সভায় অনুমোদন লাভ করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার,নান্দাইল,ময়মনসিংহ ও সভাপতি আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসা নিয়োগ দানকারী কর্মকর্তা হিসেবে তাহার কার্যালয়ের স্মারক নং ৭৪৩ তারিখঃ ০৭/১০/১৯৯৫ ইং সুপার পদে নিয়োগ পত্র প্রদান করেন। উক্ত নিয়োগ পত্রের প্রেক্ষিতে আমি ০৯/১০/১৯৯৫ইং তারিখ আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসার সুপার পদে যোগদান করে কর্মরত আছি। সুতরাং আমার নিয়োগ কর্মকর্তা আমি নিজে নই। নিয়োগদানকারী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নান্দাইল,ময়মনসিংহ মহোদয়।
গ) পত্রিকায় বলা হয়েছে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা সমূহ) এর জনবল কাঠামো সম্পর্কিত নীতিমালা ১৯৯৫ইং সনের গেজেট ব্যাতিরেখে ও অনুমোদন হীন স্থানীয় পত্রিকায় আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসার সুপার পদে ১৯৯৫ইং সনের ১০ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ০৩(তিন) দিনের মধ্যে তড়িগড়ি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এ প্রেক্ষিতে আমার বক্তব্য :-
বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা সমূহ) এর জনবল কাঠামো সম্পর্কিত নীতিমালা ১৯৯৫ইং সনের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে ২৪ অক্টোবর ১৯৯৫ইং তারিখ। ১৯৭৯ নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সুপার পদে আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে । ১৯৯৫ইং সালের জনবল কাঠামো প্রকাশের ০১ (এক) মাস পূর্বে আমি আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসার সুপার পদে যোগদান করেছি। সুতরাং ২৪ অক্টোবর ১৯৯৫ইং তারিখ প্রকাশিত জনবল কাঠামো আমার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে। সুপার পদে নিয়োগের জন্য ১৯৭৯ এর বিধি বিধান অনুযায়ী যথাযথভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে। ০৩(তিন) দিনের মধ্যে তড়িগড়ি করে নিয়োগ প্রদান করা হয় নাই। কেননা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে ১০/০৭/১৯৯৫ইং তারিখ নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে ২৪/০৯/১৯৯৫ইং তারিখ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় ০৩ (তিন) মাস পর নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে এবং নিয়োগ দানকারী কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নান্দাইল,ময়মনসিংহ।
ঘ) শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ঘাটতির বিবরণ ঃ- এ বিষয়ে আমার বক্তব্য :-
আমি ১৯৯৪ইং সালে কামিল ফিকাহ (প্রাইভেট পরীক্ষায়) অংশ গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নান্দাইল,ময়মনসিংহের নিকট থেকে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করে ১৯৯৫ইং সালের কামিল ফিকাহ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করি এবং দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হই। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর পরই সুপার পদে নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষার সার্টিফিকেটে যে তারিখ উল্লেখ রয়েছে ইহা বোর্ড কর্তৃক সার্টিফিকেট ইস্যুর তারিখ। ইহা ফলাফল প্রকাশের তারিখ নহে। অভিজ্ঞতার বিবরণ ঃ- ১। নান্দাইল কাটলীপাড়া খালেকিয়া আলিম মাদরাসায় সহঃ মৌলভী ফাযিল পদে আমার অভিজ্ঞতা ০২ (দুই)বছর ০৮ (আট) মাস ১৮ (আঠারো) দিন।
২। নিভিয়াঘাটা ফাযিল মাদরাসায় প্রভাষক (আরবি) পদে ০২ (দুই) বছর ১০ (দশ) দিন।
৩। আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে ০৬ (ছয়) বছর ০৬(ছয়) মাস ০৮(আট) দিন।
সর্ব মোট অভিজ্ঞতা ১১ (এগারো) বছর ০৩ (তিন) মাস ০৬(ছয়) দিন।
সুতরাং সুপার পদে নিয়োগের সময় আমার অভিজ্ঞতার কোন ঘাটতি ছিলনা।
সর্বশেষ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) শিক্ষক কর্মচারী চাকুরীবিধি ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত) ও ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রবিধান মালায় দাখিল, আলিম, ফাযিল ও কামিল মাদরাসার সুপার, অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড হতে কামিল পাস হতে হবে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে কামিল ১ম, ২য় ও ৩য় বিভাগ উল্লেখ করা হয় নাই।
একটি সুষ্ঠু সুচারো রূপে পরিচালিত ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত ও বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য ভিতর বাহিরের একটি কুচক্রী মহল আমার ও প্রতিষ্ঠানের মান ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে তথ্যবিহীত মিথ্যা অভিযোগ আনয়ন করিয়াছে । আমি তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
মোঃ আব্দুল হাই
অধ্যক্ষ- আচারগাঁও ফাযিল মাদরাসা
নান্দাইল, ময়মনসিংহ।
মোবাঃ ০১৭৬৭৪১৯০৮১
Leave a Reply