মো. মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় একটি পৌরসভা সহ ১৩টি ইউনিয়নে বিশাল বিস্তীর্ণ মাঠে, প্রকৃতির নিয়মে হালকা বৃষ্টি আর খরার মধ্যে দিয়ে কৃষকরা তাদের আবাদি জমিতে রোপন করেছে রোপা আমন ধান। আমন ধান ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পার্চিং পদ্ধতি। জমিতে গাছের ডাল, খুটি, বাশেঁর কঞ্চি, পোতা হয়।
সে গুলোর উপর বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা উড়ে এসে বসে ফসলের ক্ষতিকারক কীট পতঙ্গ খেয়ে ফেলে। পোকার আক্রমন থেকে ফসল রক্ষার এই পদ্ধতিকেই পার্চিং পদ্ধতি বলে। এদিকে কীটনাশক ঔষধের দাম বেড়ে যাওয়া প্রান্তিক চাষিরা এখন পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক ভাবেও লাভবান হচ্ছে। ফসল রক্ষার এই পদ্ধতিকেই শ্রেষ্ট বলে মনে করছেন তারা।
কৃষকরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে তাদের জমিতে রোপন করেছেন আমন ধান। এখন তাদের ধান গাছ গুলো দিন দিন বড় হচ্ছে। সবুজ আর সবুজে ছেয়ে গেছে উপজেলার ফসলের মাঠ গুলো। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান জমি গুলো, আর এই ধানের গাছ কৃষকের মনে এনে দিয়েছে প্রশান্তি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, এবার নান্দাইলে ২২হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার ৬শ ২৪ মেট্রিক টন ধান। এর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন কৃষকরা।
কৃষিবিদ আরও বলেন,পার্চিং সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ডেড পার্চিং ও লাইভ পার্চিং, মরা ডালপালা জমিতে পুতে রাখলে তা হল ডেড এবং জীবন্ত গাছের ডাল জমিতে পুতেঁ রাখলে তা হল লাইভ পদ্ধতি। পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারকারী আচারগাওঁ ইউনিয়নের নাখেরাজ গ্রামের কৃষক আঃ রশিদ মিয়া বলেন, খরচ বিহীন পার্চিং পদ্ধতি। অনেক সময় জমিতে বিষ প্রয়োগ করেও ফল পাওয়া যায়না তাই পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি।
মুশুলী ইউনিয়নের পালাহার গ্রামের কৃষক রফিক ইসলাম বলেন, বনের পাখিরা সারাদিন উড়ে উড়ে জমিতে পুতে রাখা ডালে বসে পুরুৎ করে উড়ে গিয়ে পোকা ধরে গিলে পেলে। এভাবেই সারাদিন বনের পাখিরা ফসলের ক্ষতি কারক কীট পতঙ্গ ও পোকা মাকড় খেয়ে রক্ষা করছে আমাদের ফসলি জমি গুলো।
Leave a Reply