দেশ শীগ্রই প্রসব করবে লাখ-লাখ বেকার কথায় আছেনা, যে জাতি যত শিক্ষীত সে জাতি ততউন্নত। আবার আমরা জানি ও বলি যে, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড ইত্যাদি।আসলে আমরা বাংলাদেশিরা শিক্ষা ছাড়া সবদিক থেকে উন্নত? কথাটা বুঝতে সমস্যা না হলেও মানতে একটু অসুবিধে, তাইনা?
যাক, এবার বলেনতো মেরুদন্ডহীন বা পঙ্গু মেরুদন্ডে কি কেহ ভাল জীবন-যাবন করতে পাড়ে? এটাও ঠিক কেহ পারুক আর নাই পারুক আমরা পারার চেষ্টা করি।আজ-কাল আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে পড়ছে
করোনা নামক মহা শত্রুর দোহাই দিয়া গত ১৪ মাস যাবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। যে কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো এখন মূর্খ উৎপাদনের কারখানায় রুপান্তর হচ্ছে বললেও চলে।
যদিও সারাদেশে সরকারী, আধা সরকারী, সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান,সবকিছু খোলা আছে যথারীতি।কোথাও কিছু হচ্ছেনা , কোথাও কেহ মরছেনা। আসলে যে স্বপ্ন আমরা দেখতেছি, এতে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি ছাড়া সফলতার স্বপ্ন কোনদিন বাস্তব হবেনা।
করোনার উপস্থিতিতে সব খোলা রেখে শুধু লেখা-পড়ার সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রাখাকে তামাশা হিসাবে দেখেছে দেশের মানুষ। বিষয়টা আঁচ করতে হলে এ সম্পর্কে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবর গুলোর কমেন্ট বক্স দেখা যেতে পাড়ে।
আসলে আমরা কি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি কি না, তা বিশেষ বিবেচনার দাবি রাখে। আমরা অনুভব করি, মৃত্যর যন্ত্রনায় কাতর হয়ে বিচানায় পরে চট-পট করার চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল।যদি ভাবা যায় অথবা মনেকরি তবে ঠিক সে অবস্থানেই আছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বিগত কয়েক বছর যাবৎ দেখতেছি বাংলাদেশের শিক্ষার অবনতির লিড নিউজ গুলো! এক সময়ের অক্সফোর্ড খ্যাত বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা সিরিয়াল থেকে নামতে নামতে অবশেষে দক্ষীন এশিয়ার শীর্ষস্তও পর্যন্ত ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে না।অন্যান্য বিশ্ববিদ্যাল গুলোও সুনাম অর্জনে অনেকাংশে পিছপা! আর এর মূলে কি, তা কি ভাবা উচিৎ নয়?
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জরিপে ও তাদের মার্ক পর্যবেক্ষণ করলে সহজেই বুঝা যায় শিক্ষাক্ষেত্রে রয়েছে আমাদের দারাবাহিক অবনতি আছে পরিপূর্ণ ব্যর্থতা। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টার ও পিএইচডি দারি সহ যত উচ্চতর ডিগ্রীদারি এদেশে জন্মায় ওরা পাশের দেশ ভারতের সাথেই তাল মিলাতে সক্ষম হয়না! বৃটেন-আমিরিকা, ইতালি-কানাডা, কুরিয়া-জাপান, চিন-মালেশিয়া আর ইউরোপের উন্নত দেশ গুলোর সাথে কি আর তুলনা করা যায়?
যখন শিক্ষায় ধসের পর ধসের সংবাদ আসছিল, শিক্ষা নিয়ে অনেক লেখা-লেখি, চিন্তা-ভাবনা শুরু হচ্ছিল ঠিক এমন অবস্থায় গত ৮ই মার্চ ২০২০ ইং দেশে আগমন ঘটলো মহামারী করোনার/কভিট১৯ এর। আচমকা ১৭ই মার্চ বন্ধকরে দেওয়া হলো সকল স্থরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা ব্যবস্থা, যা এখনো অব্যাহত।
এরিমধ্যে ডিগ্রী, অনার্স-মাষ্টার্স সহ উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরণের সেশনজট। বয়স পাড় হয়ে যাওয়া সহ কতযে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে সেধারণা আমারমত ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে দেওয়া অসম্ভব।
তবে এতটুকো ধারণা দিতে পাড়ি যে, দেশ এক সাথে কয়েক লক্ষ বেকার প্রসব করবে নিঃসন্দেহে।
জন্মদিবে লক্ষ লক্ষ মুর্খের! যারা না পারবে ক্ষেতে-খামারে কাজ করার যোগ্যতা, না পাবে কোন চাকরীগন্ধ! জাতি সে বোঝা সইতে পারবে কিনা তা নিয়েও আছে গভীর সন্দেহ।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের অবস্থাই কি ভাল, এটা কেহ বলতে পাড়বে? প্রাথমিক ও প্রাক-প্রথমিকের কথা কি আর বলব! এদের কাছ থেকে শিক্ষার পোরু ভাবটাই হারিয়ে গেছে বহু আগেই। এদিকে যেমন সময় চলে যাচ্ছে সময়ের গতিতে, তেমনী অনেকের অনেক টাকাও খরচ হচ্ছে যথারীতি।
এক কথায় শিক্ষা নিয়ে এমন এক জটিল ও কঠিন অবস্থায় জাতি ইতি পূর্বে আর কখনো পড়েছে বলে মনে হয়না। এদিকে সরকারী ও এমপিও ভূক্ত প্রতিষ্ঠানের সকল স্টাফের বেতন ভাতা যথারীতি চালু থাকলেও জীবন্ত মরছে বেসরকারী/কিন্ডার গার্ডেন এমন সব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত জনবল।
আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অন-লাইন, অফ-লাইন, এমনকি চুরি করেও চালাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। কারো পরীক্ষা হচ্ছে আবার কারো হচ্ছেনা, কারো রেজাল্ট হচ্ছে কারো হচ্ছেনা। কারো কিছু পরীক্ষা হচ্ছে আবার কিছু রয়েছে। আবার কেহ অটোপাশ করছে, কারো অটো আবার আটকা পড়ছে! এসবকে কি বলা যায়?
অন্যদিকে, এ সুযোগে ছোট্র শিশু থেকে শুরুকরে কিশোর-তরুণ আর শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতী সবাই ব্যস্ত মোবাইলে ইন্টারনেট শিক্ষায়? কেরাম বোর্ড খেলায় ইতাদি! যাকে বলা যায়, জীবন ধ্বংশের খেলা। কি করবে ওরা? প্রত্যেকেরই তো বয়সে সাথে মিলিয়ে কিছু একটা করা লাগে?
তাই হয়তো কোমলমতি শিশু কিশোরেরা এটা করছে। যেখানে রয়েছে শত শত রকমের গেম ও নানান ধরণের অশ্লীল দৃশ্য উপভোগের সুবর্ণ সুযোগ যা অবলীলায় সৃষ্টিকরে দিচ্ছি আমরা।
এ অবস্থায় কি আমরা ও আমাদের সন্তানেরা জাতি হিসাবে চিরমৃত অবস্থায় পৌছে যাচ্ছে, নাকি উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে? নাকি পৃথিবীতে বাঁচার উপায় টুকো হারিয়ে হত ভাগাদের ন্যায় পথে বসার উপক্রম হচ্ছে?সেটা দেশের সু-শিক্ষীত, সুশিল সমাজ, রাষ্ট্রের কর্ণদার তারাই পরিস্কার করতে পারবে বুঝিয়ে বলতে পারবে।
যদি তারা ব্যর্থ হয়,হলে এমনিতেই সবকিছু সব অবস্থা একদিন বিশ্ববাসির কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।
মোদ্দা কথা, দুর্নীতির মহা আখরায় পরিনত এই দেশ বর্তমানে একটা মস্তবড় জগা-খিঁচুরিতে রূপায়িত হচ্ছে! যা পরিপূর্ণ ভাবে নিয়ম তান্ত্রিকতায় আনা কতটুকো সম্ভব হবে নাকি হবেনা, তা সময়ে দেখা যাবে? অপেক্ষায় রইলাম।
লেখক ও সিটিজেন জার্ণালিষ্ট- হাফেজ শাহ মুহাঃ মিজান তালুকদার হারুন
Leave a Reply