1. admin@www.gsnnews24.com : admin : সাহিত্য বিভাগ
বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন

জাতীয়

শিরোনাম

সারাদেশে লাইসেন্সবিহীন চালকের অপসারণ জরুরি

  • Update Time : রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৩০৮ Time View

নিরাপদ সড়ক চাই। এ দাবি আজকের নয়। সুদীর্ঘ সময় ধরে এ দাবি উচ্চারিত হচ্ছে। মিডিয়ায় প্রতিদিনের খবরেই পাওয়া যাচ্ছে শব্দাবলির কারণগুলো, কিন্তু কোনো কিছুতেই সুরাহা হয়নি; কমেনি সড়ক দুর্ঘটনা। বিপরীতে বলা যায়, বেড়ে যাওয়ার মাত্রাটাই বেশি।

পুলিশ সূত্র মতে, সারা দেশে ৮৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ চালকের বেপরোয়া গতি। ভুল ওভারটেকিংয়ের কারণে ঘটে আরো ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ দুর্ঘটনা। সব মিলিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার ৯০ দশমিক ৬৯ শতাংশের জন্যই দায়ী চালক। পুলিশের অভ্যন্তরীণ হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ ও ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে।

তথ্য মতে, সড়ক-মহাসড়কে বিপুলসংখ্যক যানবাহন চলছে লাইসেন্সবিহীন চালক দিয়ে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাব মতে, অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে নিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার ৪২০। এসব গাড়ির বিপরীতে লাইসেন্সধারী চালকের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১৭৪। অর্থাৎ ৭ লাখ ৩১ হাজার ২৪৬টি গাড়ির বৈধ কোনো চালকই নেই। এর বাইরে অনিবন্ধিত ছোট-বড় গাড়িও রাস্তায় চলছে। সেগুলোতেও লাইসেন্সধারী চালক থাকার কথা নয়। আবার এসব গাড়ির সঠিক পরিসংখ্যান পুলিশ ও বিআরটিএর কাছে নেই। আর এটিই হচ্ছে সড়ক পরিবহনের বাস্তব চিত্র।

এক কথায় বলতে গেলে এখানে কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই। এ পর্যন্ত জবাবদিহির দৃশ্যত কোনো চিত্র আমরা পাইনি। জবাবদিহির প্রশ্নে সরকার যে চেষ্টা করেনি, তাও নয়; কিন্তু কোনো চেষ্টাই কাজে আসেনি। যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদের নেতিবাচক আচরণের জন্য তা ইতিবাচক ফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে। মালিকপক্ষ কীভাবে লাইসেন্সবিহীন চালকের হাতে তাদের যানবাহন তুলে দিচ্ছেন, তা আমাদের জানা নেই। যুক্তি উত্থাপন করতে গিয়ে তারা বলছেন, চালকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণকেন্দ্র নেই। তাই প্রশিক্ষিত চালকদের বাইরে তাদের নিয়োগ দিতে হচ্ছে। একদিকে চালকেরা প্রশিক্ষিত নন, পাশাপাশি লাইসেন্সবিহীন; এরা গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসলে দুর্ঘটনা যে ঘটবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে মালিকপক্ষ একথাও স্বীকার করেছেন যে, ওভারটেকিং, ওভারস্পিড, ওভার কনফিডেন্স, ওভারলোড ও মোবাইল ফোন ব্যবহারই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। তারা ১২০টি কারণের কথা উল্লেখ করলেও পাঁচটি কারণকে মুখ্য বলে উল্লেখ করেছেন।

আমরাও মনে করি, সড়ক-মহাসড়ক থেকে এই পাঁচটি কারণ তিরোহিত করা গেলে দুর্ঘটনার মাত্রা অন্তত ৫০ শতাংশ কমে আসতে পারে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এসব কারণ তিরোহিতের প্রশ্নে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং কারণগুলো যাতে জীবিত থাকে সে ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে তাদের উৎসাহ চোখে পড়েছে।

দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আইন কম হয়নি। কিন্তু আইন দিয়ে থামানো যায়নি চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হলে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় মামলা হয় আইনে বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানোর কারণে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি সাধন হলে ৯৮ ধারায় ৩ বছর জেল বা ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। আর ১০৫ ধারায় পাঁচ বছরের জেল বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। এসব বিধানও চালকদের স্বেচ্ছাচারিতাকে দমাতে পারেনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আইন তাদের কাবু করতে পারেনি। আমরা মনে করি, সরকারের সঙ্গে আপস-মীমাংসায় মালিক ও শ্রমিকপক্ষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তাদের স্বাচ্ছন্দ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে। আর এখানেই লুকিয়ে আছে সব রহস্য। এই রহস্য মূলোৎপাটনের মধ্যেই আছে দুর্ঘটনামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সূত্র।

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews