দীর্ঘ তিন বছর কোরআন মুখস্ত হয়েছেন হাফেজ, আগামী ২৭ রমজান সেই পুরস্কার স্বরুপ পাবেন বড় হুজুর পাগরি পরিয়ে দেবেন স্বীকৃতি । সে লক্ষেই চলছে প্রস্তুতি। কিন্তু হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় চলেগেলেন ওপার জগতে।
ভোলার চরফ্যাসনে ওয়াল্টনের কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে সিয়াম(১৬) ও জিহাদ(১৪) নামের দুই হাফেজ নিহত হন। রবিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩.৩০ মিনিটে চরফ্যাসন পৌর শহরের ডাক্তার শাহে আলম শরিফ এর বাড়ির দড়জা সংলগ্ন সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হাফেজ সিয়াম ভোলার চরপাতা ইউনিয়নের বাসিন্দা, হেলাল মিয়ার ছেলে ও জিহাদ চরফ্যাসন উপজেলার জিন্নাগড়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ মান্নানের ছেলে। তারা চরফ্যাসন সরকারী কলেজ রোডে অবস্থিত তানজিমুল কুরআন হাফেজী মাদরাসার আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, বার্ষিক পরিক্ষা শেষে দুই ছাত্র বাই সাইকেল যোগে খান বাড়ি সড়ক থেকে মূল সড়ক হয়ে চরফ্যাসন বাজারের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ পিছন থেকে অটো রিক্সা ধাক্কা দিলে দু’জনে সড়কে পড়ে গেলে সামনে থাকা বেপরোয়া গতির ওয়ালটন এর মালামাল পরিবহনকারী কাভার্ড ভ্যান তাদেরকে চাপা দেয়। স্থানীয়রা গুরুতর আহত দুই হাফেজ ছাত্রকে চরফ্যাসন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিয়ামকে মৃত ঘোষণা করেন এবং জিহাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
নিহত দুই ছাত্রের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা কামাল উদ্দিন জানান, নিহত সিয়ামকে ২৭ রমজানে পূর্ণাঙ্গ হাফেজ হওয়ার স্বীকৃতি স্বরূপ পাগড়ি পড়ানোর কথা ছিলো। সিয়ামের মা তাছলিমা ছেলের এমন আকস্মিক দুর্ঘটনায় থানা কমপ্লেক্স কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। প্রবাসী বাবা ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পরেন। চরফ্যাসন থানার অফিসার ইন চার্জ মোরাদ হোসেন জানান, নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় পোস্টমর্টেম ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে । এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।