বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নান্দাইলে মাকে ভাত ভাড়ার কথা বলে পুকুরে ডুবলো যুবক হরিরামপুরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ৭৭ টি ভূমিহীন -গৃহহীন পরিবার ভূমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন খরচ কমল হজের ১১৭২৫ টাকা, নিবন্ধন ২৭ মার্চ পর্যন্ত হরিরামপুর উপজেলাধীন ঐতিহ্যেবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক শিক্ষা সফর-২০২৩ অনুষ্ঠিত নান্দাইলে মধ্য বাশঁহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফখর উদ্দিন ভূইঁয়ার বিদায় অনুষ্ঠান নান্দাইল রোড উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র জাতীয় পর্যায়ে ভারোত্তলনে ২টি পদক লাভ নান্দাইলের নিভিয়াঘাটা ফাযিল মাদ্রাসায় বার্ষিক ইসলামী সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত চিত্রনায়িকা মাহির বিষয়ে যা বললেন পুলিশপ্রধান ঢাকাস্থ নান্দাইল উপজেলা কল্যাণ সমিতি আনন্দ ভ্রমণ কক্সবাজার ২০২৩ অনুষ্ঠিত পলাতক আসামি আরাভের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ গ্রহণ করেছে ইন্টারপোল : আইজিপি

মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী মৃত ফুলবানু জীবিত হয়ে হেবা করে দিলেন জমি, প্রতারকের কান্ড !

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩
  • ১২০ Time View

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামে কৃষক স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে সংসার চলছিল ফুলবানু বিবির। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা চালাতে বিক্রি করতে হয় স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটা ছাড়াও ফসলি জমি। কিন্তু বাঁচা হয়নি তার। এ অবস্থায় সাত বছর আগে মারা যাওয়া সেই ফুলবানুই এবার জীবিত হয়ে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ছেলের নামে হেবা করে দিলেন বিক্রীত জমি! অথচ মৃত ফুলবানু বিবির কোনো ছেলে সন্তান ছিল না।

 

 

 

স্থানীয় সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের স্ত্রী ২০১৬ সালে মারা যান। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়া জমিতে বসবাস করছিলেন। মা মারা গেলে মেয়ে চলে যান শ্বশুরবাড়িতে। পরে বাড়ি ও ফসলি জমি দখলে নেন ক্রয়কৃত জমির মালিক মো. হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মোছাম্মৎ মজিদা খাতুন। তিনি ওই বাড়িতেই বর্তমানে ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে বসবাস করছেন।

মোছাম্মৎ মজিদা খাতুন জানান, তার স্বামীর কাছে জমি বিক্রি করা হলেও তিনিই ফুলবানু বিবিকে দেখভাল করেছেন। মারা গেলে তিনিই ঘরের পাশেই কবর দেন। এর মধ্যে চার দিন আগে মজিদা জানতে পারেন, তার বাড়ি ও ফসলি জমি পাশের গ্রামের আব্দুল বারেকের নামে হেবা করে দিয়েছেন ফুলবানু নামে এক নারী এবং ফুলবানু নামের ওই নারী নাকি বারেকের মা। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যে ফুলবানু বিবি সাত বছর আগে মারা গেছেন, তার নামেই বারেকের মায়ের নাম।

 

 

 

তবে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে জানা যায়, নাম এক হলেও তারা ভিন্ন মানুষ। মৃত ফুলবানু বিবির স্বামী মৃত আব্দুল জলিল, মা মৃত তালজান, বাবার নাম দেওয়া নেই, জন্ম তারিখ ১৯২৯ সালের ৯ জুলাই, আইডি নম্বর ৬১১৭২৩১২৭৫৭১৪। অপরদিকে বারেকের মায়ের নাম ফুলবানু, যার স্বামী হাবিবুর রহমান, মা জরিজস বানু, বাবা তালে হোসেন ও জন্ম তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৯ এবং আইডি নম্বর ৯১২১৫৩৭৪৮৫।

গত রবিবার বিকেলে ওই এলাকায় গেলে আব্দুল কাইয়ুম নামে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক আব্দুল কাইয়ুম ওরফে রঙ্গু মিয়া জানান, তার বাড়ির পাশেই বসবাস করতেন ফুলবানু বিবি। স্বামী আব্দুল জলিল জীবিত থাকা অবস্থায় তার কাছে ছাড়াও প্রতিবেশী অনেকের কাছে জমি বিক্রি করে গেছেন। ওই জমির কিছু অংশ তিনিও ক্রয় করে ভোগদখল করছেন। একপর্যায়ে স্বামী মারা গেলে স্ত্রী ফুলবানু গুরুতর অসুস্থ হন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাকি ৪৯ শতক জমি বিক্রি করে দেন। এর মধ্যে একমাত্র মেয়ের জন্য কিছু জমি রাখলেও একটি চক্রের ষড়যন্ত্রে পড়ে মেয়েও চলে যান। আর কখনো গ্রামে ফিরে আসেননি। এর মধ্যে চার দিন আগে এলাকায় প্রচার হয়, পাশের গ্রামের হাবিবুরের ছেলে বিক্রীত জমির মালিক হয়েছেন। তিনি নাকি মা ফুলবানুর কাছ থেকে হেবা করে নিয়েছেন। এই হাস্যকর ও আজগুবি ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা জানাজানির পর থেকে কথিত জমির মালিক বনে যাওয়া বারেক এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছেন।

 

 

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ৪৯ শতক জমির হেবামূলে দলিলের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়, দলিল নম্বর-১৩০৩। জমির মূল্য ধরা হয়েছে ২৭ লাখ ৭০ হাজার। জানা যায়, ৪৯ শতক জমির মধ্যে ২৩ শতক জমির বৈধ মালিক মজিদা খাতুন। তিনি গত প্রায় ২৮ বছর ধরে বসবাস করছেন। অন্যদিকে ১৭ শতক জমির মালিক মতিউর রহমান ও বাকি ৯ শতক জমির মালিক সামছুদ্দিন মাস্টার। তারা জমি দখলে রেখে চাষাবাদ করছেন।

মতিউর রহমান জানান, এত বছরেও মৃত ফুলবানু বিবির বিক্রীত জমি নিয়ে কোনো কথা শোনা যায়নি। এখন প্রতিবেশী বারেকের মায়ের নাম একই হওয়ায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। মায়ের নাম ঠিক রেখে বাবার নামের সঙ্গে ওরফে আব্দুল জলিল (মৃত ফুলবানু বিবির স্বামীর নাম) বসিয়ে মাকে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে হেবামূলে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। এ অবস্থায় এ রকম ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে সমাজের লোকজনকে জানানো হয়েছে। কোনো ধরনের বিচার না পেলে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।

 

 

 

 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল বারেকের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন সংগ্রহ করে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে দলিল লেখক নজরুল ইসলাম ওরফে ইসলাম উদ্দিনের ফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি কাগজপত্র সঠিক পেয়েই তো মায়ের কাছ থেকে হেবার কাগজপত্র করে দিয়েছি। এতে দোষের কী! ৪০ বছরের জীবনে শেষ এক ধরা খাইলাম। আপনারা যেভাবেই হোক মীমাংসা কইরা দেন।

নান্দাইল উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার মীর ইমরুল কায়েস আলী জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি। তারপরও যারা দলিল লেখক, তাদের বিশ্বাস করেই দলিল রেজিস্ট্রি করি। তারাই আমার সামনে ক্রেতা-বিক্রেতাদের চেনেন বলে ঘোষণা দেন। এখন তারাই যদি প্রতারণার আশ্রয় নেন, তাহলে কী বলার আছে! এ বিষয়ে ওই অভিযুক্ত দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

Print Friendly, PDF & Email
Spread the love
  •  
  •  
  •  

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
raytahost-gsnnews