জোছনা বেগমের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পুটিয়ালিচর গ্রামে। তাঁর ছেলের নাম জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবু। গত ১ আগস্ট মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় জহিরুল মারা যান। তিনি তাঁর মায়ের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন। মা আর ছোট বোনকে নিয়ে তিনজনের সংসারের দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপরই। দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সংসারের খরচ চালাতেন তিনি।
এ ছাড়া জহিরুল ‘দাপুনিয়া-ঘাগড়া হেল্পলাইন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই সংগঠনের পরিচালক মো. রাকিব বলেন, জহিরুল মারা যাওয়ার পর তাঁর মা একা থাকেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। যে কারণে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বন্ধুরা জোছনা বেগমের খোঁজখবর রাখেন। জহিরুলের মায়ের নিজের জমি নেই। বাড়ির পাশে লিজ নেওয়া চার কাঠা জমিতে তাঁরা বন্ধুরা মিলে ধান লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এখন সেই ধান কেটে দিচ্ছেন।
জোছনা বেগম বলেন, ছেলের বন্ধুদের দেখলে মনটা একটু ভালো হয়। পরক্ষণেই মনটা খারাপ হয়ে যায় তাঁর। বসার ঘরে ছেলের সঙ্গে একটা ছবি আছে, সেই ছবিটাই সারা দিন দেখেন। এরপর বললেন, ‘ছেলে যাওয়ার পর আমার জীবনে আর কোনো আনন্দ নেই। ছেলের বন্ধুরা আমার বাড়ি এলে খুব ভালো লাগে। তাঁদের প্রতি আমি খুব কৃতজ্ঞ।’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা আজ রোববার বললেন, মানুষের কষ্টে পাশে দাঁড়াতেন জহিরুল। সুনামগঞ্জে এবার বন্যা হলে তিনি বন্যার্ত মানুষের কাছে যান ত্রাণসহায়তা নিয়ে। ছয়বার স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন তিনি। গ্রামের খালে সেতু ছিল না, জহিরুল উদ্যোগী হয়ে খালের ওপর প্রায় ৪০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকো করার উদ্যোগ নেন। গ্রামের মানুষ সে কথা মনে রেখেছে।