1. admin@www.gsnnews24.com : admin : সাহিত্য বিভাগ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
চরফ্যাসনের দুলারহাটে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজীতে অতিষ্ঠ মানুষ, প্রতিবাদে মিছিল এবং মানববন্ধন হরিরামপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪, সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ চরফ্যাশনে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ উদ্বোধন তাসের খেলা – কবি মোঃ আবদুল মালেক নান্দাইলে দশদিন ব্যাপী গ্রাম ভিত্তিক ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষনের শুভ উদ্বোধন ॥ নান্দাইলে প্রাণীসম্পদ সেবা সপ্তাহ পালিত বিএনপি দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতেও ব্যর্থ হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী ডাব পাড়তে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পরে সড়ক দূর্ঘটনায় ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির মৃত্যু নান্দাইলের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নাজমুল কুলিয়াচর থেকে নিখোঁজ

জাতীয়

শিরোনাম

১০ ডিসেম্বর কী হচ্ছে, লোক মুখে সংশয় ও শঙ্কা

  • Update Time : শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৫২ Time View

১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। এই সমাবেশের স্থান নির্ণয়কে ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি। এখন দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে বাড়ছে সংঘাতের শঙ্কা। ১০ ডিসেম্বর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে কট্টর অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির দেওয়া কর্মসূচিকে ‘কোনঠাসা’ করতে সবরকম প্রস্তুতি রাখার কথা বলা হচ্ছে।

জানা গেছে, যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংশতার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ অবস্থায় জনমনে উদ্বেগ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। দুই দলের এই মুখোমুখি অবস্থানের কারণে দেশে সংঘাত-সংঘর্ষ বাড়ার আশঙ্কার কথা বলছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যাপারে নগরীতে লোকমুখেও শোনা যাচ্ছে সংঘাত ঘটবে বলে সংশয় ও শঙ্কা।

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় একটি বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেয়। সমাবেশের জন্য বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। কিন্তু বাদ সাধে দলটির নেতারা। কারণ, সরকার নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করতে রাজি নয় বিএনপি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, দশ লাখ লোকের এ সমাবেশটি তারা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে করতে চান। গত তিন দিনে দলের স্থায়ী কমিটির দুটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলটির নেতারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার পক্ষে মত দেয়। অনুমতিহীন এ সমাবেশ সফল করতে দলটির নেতারা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। অনুমতি ছাড়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশ আয়োজনের চেষ্টাকে রাজনৈতিক উসকানি বলছেন সরকারি দলের নেতারা। আর সরকারের পক্ষ থেকে অনুমতি নেই এমন জায়গায় জনসমাবেশ করতে না দেওয়ার ব্যাপক আয়োজনের কথা বলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও।

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভায় পূর্বে ঘোষিত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থান নির্বাচন নিয়ে এই সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় নয়াপল্টনে গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করা হয়। সব দুরভিসন্ধি, বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ঢাকায় গণসমাবেশকে সফল করার জন্য জনগণকে আহ্বান জানাই। সোহরাওয়ার্দীতে কেন সমাবেশ করতে চাই না, আমরা এ বিষয়ে একটি চিঠি আইজিপি বরাবর দিয়েছি। তাছাড়া আমাদের নেতারা সমাবেশ নিয়ে প্রতিদিনই বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলছেন।

১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে ঘিরে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য এসেছে তাতে ক্ষমতাসীন এই দল এবং বিএনপির মধ্যে মুখোমুখি অবস্থানেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপিকে যে সহজে ছাড় দেওয়া হবে না, সে ইঙ্গিত পাওয়া যায় আওয়ামী লীগের নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে। এরই মধ্যে ‘সতর্ক পাহারার’ নামে আওয়ামী লীগ ঢাকাকে মোটামুটি অবরুদ্ধ করে ফেলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর বিষয়টিও প্রকাশ্যে এসেছে। ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবেন। বিএনপিকে শান্তি নষ্ট করার সুযোগ দেওয়া হবে না।

 

ঢাকার বাইরের বিভাগীয় গণসমাবেশগুলোতে বাধার মুখেও বেশ বড় জমায়েত দেখাতে সফল হয়েছে বিএনপি। এসব সমাবেশ দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙা ভাব তৈরি করেছে। তবে ঢাকায় ব্যর্থ হলে কর্মীদের সেই চাঙাভাবে ভাটা পড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর আওয়ামী লীগ এটাই করতে চাইছে। এ জন্য ক্ষমতাসীন দলটি কয়েক স্তরের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মতো দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাকও বলেছেন, বিএনপি ঢাকায় কোনো ঝামেলা করলে হেফাজতে ইসলামকে মতিঝিল থেকে যেভাবে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এর চেয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান স্বাধীনতার ঘোষণাস্থল কিন্তু সে জায়গা আপনাদের পছন্দ নয়। পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে সেই জায়গা আপনাদের পছন্দ নয়। তবে সমাবেশের নামে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা করা হয়, কোনো সহিংসতা করা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেবে।

 

এদিকে গতকাল বিকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘ঢাকার বিভাগীয় গণসমাবেশকে নিয়ে অবৈধ সরকার যেন বেসামাল হয়ে পড়েছে। শুরু করেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার, মিথ্যা কাহিনি সাজিয়ে পাইকারি হারে মামলা, গভীর রাতে নেতাকর্মীদের বাড়িতে ডাকাতের মতো হানা দিচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার চরম মাত্রায় শুরু করেছে আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মনে হয়, পুলিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শপথ গ্রহণ করেছে যেভাবেই হোক ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে হবে। এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতাসহ ঢাকা মহানগর এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই সরকার জনআতঙ্কে ভুগছে। তাই ঢাকায় গণসমাবেশের কথা শুনেই দিশাহারা হয়ে দমনের নিষ্ঠুর পথ অবলম্বন করেছে।’

 

ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের স্থান হিসেবে নয়াপল্টনকে টার্গেট করেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ব্যাপক লোকসমাগম জমায়েতের লক্ষ্যে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ১১ সাংগঠনিক জেলার নেতাদের সঙ্গে স্কাইপিতে বৈঠক করেছে দলটির হাইকমান্ড। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়েও প্রতিদিনই ধারাবাহিক বৈঠক করছেন। এসব বৈঠকে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এড়িয়ে ‘কৌশলে’ চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কোনো মশাল মিছিল না করাসহ বিশৃঙ্খলা এড়াতে সতর্ক থাকার জন্য ঢাকাসহ সব সাংগঠনিক জেলাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

 

বিএনপির ঢাকা বিভাগে ১১টি সাংগঠনিক জেলা হলো ঢাকা জেলা, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ জেলা, নারায়ণগঞ্জ মহানগর, গাজীপুর জেলা, গাজীপুর মহানগর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদী। গণসমাবেশে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে এমন অশঙ্কা থেকে এরই মধ্যে ঢাকায় অনেক নেতাকর্মী চলে আসছেন বলে জানিয়েছেন নেতারা। সারা দেশ থেকে প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।

বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গণসমাবেশের জন্য ঢাকায় আসা শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। তারা আত্মীয়, বন্ধুসহ পরিচিতদের বাসায় উঠেছেন। দূরের জেলা থেকে আসা নেতারা এখনই নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিড় করছেন। সূত্র জানায়, ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে দূর থেকে আসা নেতাকর্মীদের জন্য এরই মধ্যে থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব মহানগর নেতাদের ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে থাকার বিষয়ে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে কাজ করার বিষয়ে হাইকমান্ডের নির্দেশনা রয়েছে।

 

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে রক্তাক্ত সহিংসতা, নাশকতা, নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়ংকর অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। ওই সমাবেশ সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মহাসমাবেশ ঘিরে গোটা রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যে কোনো মূল্যে জানমাল রক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল।

 

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমরা দেখেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন রাজপথে সমাবেশ করে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। সেটা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা জরুরি। ১০ ডিসেম্বর যেহেতু সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছে, এখন বিএনপি যদি রাজপথ ছেড়ে উদ্যানে যায় এবং সব রাজনৈতিক দলই যদি এ সিদ্ধান্ত নেয় আর কোনো সভা-সমাবেশ রাজপথে করবে না। যত সমাবেশ হবে মুক্ত ময়দানে/খোলা মাঠে বা বিভিন্ন মিলনায়তনে। এটা হবে উত্তম পদ্ধতি। এটা এক সময়ে সরকারের নিয়মও করা হয়েছিল। কিন্তু নিয়মটা অনেক রাজনৈতিক দলই অনুসরণ করছে না। এটা দুঃখজনক।

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews