নিজ গ্রামে ‘সিঙ্গাপুরপ্রবাসী সেলিম’ হিসেবে পরিচিত তিনি। অথচ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে থেকে তৈরি করেন জাল টাকা। গত শনিবার তাঁর ভায়রার দুই ছেলে জাল টাকা নিয়ে ধরা পড়ার পর অনুসন্ধানে এমনই তথ্য পাওয়া গেছে।
সেলিম মিয়া নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের ডুমদী গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে।
জাল টাকা তৈরির ঘটনায় সেলিমসহ তাঁর শ্বশুরবাড়ির আটজনের বিরুদ্ধে গত রবিবার ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়।
জানা যায়, গত শনিবার সেলিমের ভায়রা ভাইয়ের দুই ছেলে ৯০ হাজার জাল টাকা নিয়ে ধরা খাওয়ার পর ঈশ্বরগঞ্জের রাজীবপুর ইউনিয়নের বৃ-দেস্থান গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় সেলিমের শ্বশুর আবুল কাশেমের বাড়ি থেকে আরো ২৪ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় গত রবিবার কালের কণ্ঠে ‘দুই শিশু টাকা ভাঙাতে গেলে জাল নোট তৈরির কারখানার খোঁজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রাজীবপুরবাসী জানায়, সেলিম ছয়-সাত মাস আগে ঢাকায় র্যাবের হাতে বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় জেল খাটার পর সম্প্রতি তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
এদিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের ডুমদী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পাকা বাড়ি তৈরি করছেন সেলিম। বাড়ির চারপাশ উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ভেতরে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক পাকা বাড়ি।
ডুমদী গ্রামের লোকজন জানান, সেলিমের বাবা আব্দুল আজিজের কোনো সহায়-সম্পত্তি ছিল না। পরের জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর গত ১০ বছরে তাঁদের সব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। হঠাৎ করে আলিশান বাড়ি তৈরি করার ঘটনাটি তাঁদের কাছে ধাঁধার মতো মনে হচ্ছে।
কেন্দুয়ার গড়াডোবা ইউপি সদস্য আবু হানিফা বলেন, ‘এলাকার সবাই তো জানে, সেলিম ও তাঁর আরেক ভাই দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর থাকেন। সেখানের টাকা দিয়ে অল্প দিনেই নিজেদের বদলে দিয়েছেন। ’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ‘মামলার এজাহারে আবুল কাশেম, তাঁর স্ত্রী, দুই নাতি, তিন মেয়ের জামাই, এক ছেলেসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরো সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে। মেয়ের জামাইদের মধ্যে সেলিম মিয়া একজন। অন্যরা হচ্ছেন কাউসার ও রাহাবুল ইসলাম রনি। ’
সূত্র: কালের কন্ঠ
Leave a Reply