মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জো বাইডেন স্বাধীনতা দিবসে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের নামে নতুন সড়ক হরিরামপুরে আন্ধারমানিক মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান দোকান বন্ধ করে পালাল মুরগি ব্যবসায়ীরা পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড নান্দাইলে বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করার অভিযোগে পুত্রের বিরুদ্ধে মামলা হরিরামপুর উপজেলায় জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তলনে অনিয়মের অভিযোগ হরিরামপুরে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা ইসলামি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কেন্দুয়ায় হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া সেই ছাত্রলীগ নেতাকে খুঁজছে পুলিশ

রাজশাহীতে পর পর ৩ মেয়ে, স্বামীর সংসারে ঠাঁই হলো না কনার

জিএসএন নিউজ ডেস্ক
  • Update Time : রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯৮ Time View

পর পর তিন মেয়ে হওয়ায় স্বামীর সংসারে ঠাঁই হলো না কামরুন নাহার কনা (৩০) নামে এক গৃহবধূর।

কামরুন নাহার কনা রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকার কামাল হোসেনের বড় মেয়ে। বাবা পেশায় ট্রাকচালক।

 

 

জানা গেছে, বছর সাতেক আগে রাজপাড়া থানার কেশবপুর পুলিশ ২নং গেট এলাকার মুদি দোকানি চঞ্চলের সঙ্গে বিয়ে হয় কনার। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয় কিছু টাকা। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী চঞ্চল ও তার পরিবারের লোকেরা নানাভাবে কনাকে নির্যাতন করতে থাকে। বাবার অভাবের সংসার হলেও সময় সময় স্বামী চঞ্চলকে দিতে হয়েছে টাকা।

কনার পরিবারের লোকদের অভিযোগ— বিয়ের পর থেকেই কনার ওপর নির্যাতন করে আসছে চঞ্চল। এ ধারাবাহিকতায় নির্যাতনের একটি বড় কারণ পর পর তিন কন্যাসন্তান হওয়া।

 

কনা বলেন, পর পর তিন কন্যাসন্তান হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে ভুল বোঝে। বিভিন্নজন খোটা দিয়ে কথা বলেন। স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও, সে মনে মনে আমার ওপর বিরক্তি প্রকাশ করতেন। কেন আমার ছেলে সন্তান হচ্ছে না— এটিই ছিল স্বামীর মূল অভিযোগ।

তিনি বলেন, কন্যাসন্তানের বিষয়টি তারা বড় করে দেখলেও কীভাবে আমাকে তাড়ানো যায়, সেই কৌশল তারা সবসময় খুঁজেছে। নানা ছলছুতায় আমাকে স্বামীসহ তার পরিবারের লোকদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। পরিস্থিতিটা এমনই— আমি যখন যেটি করি, তার সবটাতেই তাদের বিরক্তি ও ঘৃণা প্রকাশ করে আমাকে নির্যাতন করা। সেটি ভালো কাজ হোক আর অনিচ্ছাকৃত ভুল হোক।

এভাবেই আমি স্বামীর সংসার আঁকড়ে পড়ে থেকেছি সাত বছর। কিন্তু অবশেষে তারা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে সাজানো টাকা চুরির একটি অপবাদ দিয়ে। কিন্তু এর পরও আমি স্বামীর সংসার ছাড়তে চাইনি।

 

কনা বলেন, আমার বড় মেয়ে সুমাইয়ার বয়স ৫ বছর। মেঝটির বয়স ৩ এবং সব ছোটটির বয়স ১০ মাস। ছোট মেয়ে জন্মদানের সময় শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এ কারণে অপারেশনের মাধ্যমে আমাকে বন্ধ্যাকরণ করা হয়। ওই সময় স্বামীরও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু সে মন থেকে সেটি মানতে পারেনি। এর পর থেকে নির্যাতনে সব মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। মারধর ছিল নিয়মিত বিষয়।

তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ মাস আগে আমার শাশুড়ি মারা যান। এরই মধ্যে স্বামী চঞ্চলের এক ভাই মারা যান। এর পর থেকেই চঞ্চল পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এসব জেনেও শুধু সংসারের টানে স্বামীর সঙ্গে থেকেছি তিনটি অবুঝ শিশুর মুখের দিকে চেয়ে। এরই মধ্যে শাশুড়ির কুলখানির দিন স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন টাকা চুরির একটা ঘটনা সাজান। এর জন্য আমাকে দায়ী করা হয় একতরফাভাবে।

 

আমি যতবার বলার চেষ্টা করেছি যে টাকার বিষয়ে কিছুই জানি না, ততবারই স্বামী আমাকে মারধর করেছে। শেষে তিন সন্তানসহ আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিতে হয় গরিব বাবা-মায়ের বাড়িতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কনা স্বামীর বাড়িতে ফিরে যেতে রাসিকের ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন টুটুর কাছে অভিযোগ করেন। গত ৯ নভেম্বর কাউন্সিলর দুই পক্ষকেই ডাকেন তার কার্যালয়ে সমঝোতার জন্য। কিন্তু স্বামী চঞ্চল কোনোভাবেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়নি। সমঝোতা ভেঙে গেলে চঞ্চলের ভাইয়েরা মিলে কনার খালাতো ভাই নাহিদকে ঘটনাস্থলেই ব্যাপক মারধর করে আহত করেন।

 

রাসিক কাউন্সিলর টুনু বলেন, আসলে ঘটনার কারণ অন্য জায়গায়। টাকা চুরি একটা অজুহাত বটে। মেয়েটির তিনটা ছোট বাচ্চা আছে। এভাবে তাড়িয়ে দেওয়া অমানবিক। আমি সংসার জোড়া লাগানোর সব চেষ্টা করেছি। এখন আইনি পথে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি দুপক্ষকেই।

 

এলাকায় খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, কনাকে বিয়ে করার আগে চঞ্চল আগেও একটি বিয়ে করেছিলেন। সেই তথ্যটি গোপন করে কনাকে বিয়ে করেন। স্বামী চঞ্চলের আগের স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আকস্মিকভাবে তার মৃত্যু হয়।

 

প্রতিবেশীদের জানান, আগের স্ত্রীর ওপরও চঞ্চল নির্যাতন করতেন। ঠিক কী কারণে আগের স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল তা অনেকেরই অজানা।

এদিকে সর্বশেষ কনা নারী নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী চঞ্চলসহ তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করে আরএমপির রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

রাজপাড়া থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান জানান, অভিযোগটি পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Spread the love
  •  
  •  
  •  

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
raytahost-gsnnews