পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংসদে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাবের মধ্যে এবার তার জোটে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খানের ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে এমকিউএম-পি। এর আগে মঙ্গলবার রাতে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এক টুইট বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। খবর ডনের।
ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের অন্যতম জোটসঙ্গী এমকিউএম-পি বিরোধী দল পিপিপির সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোয় দেশটির জাতীয় পরিষদে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা এখন ১৭৭ জনে পৌঁছেছে। এমকিউএম-পি জোট ছাড়ায় ইমরান খানের সরকারের সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৪। জোটসঙ্গীদের নিয়ে ক্ষমতায় আসার সময় জাতীয় পরিষদে পিটিআইয়ের সদস্য সংখ্যা ছিল ১৭৯ জন।
দেশটির ৩৪২ সদস্যের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে জিততে কমপক্ষে ১৭২ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। এখন ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পিটিআইয়ের কোনো সদস্যেরও সমর্থনের প্রয়োজন নেই পিপিপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের।
এর আগে গত ২৮ মার্চ পাকিস্তানের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে।
৩১ মার্চ এ বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে।
সংসদে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট উত্থাপিত হওয়া মানে তার বিদায়ের প্রথম ঘণ্টা বেজে গেছে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশা ও বিভিন্ন কারণে ইমরান খানকে দায়ী করে আসছে বিরোধী দলগুলো। ফলে তারা তাকে আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান না।
ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিতে পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা শাহবাজ শরীফ সোমবার দেশটির সংসদে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেন ও এর অনুমতি দানের জন্য ডেপুটি স্পিকার কাশিম খানকে অনুরোধ করেন।
পাকিস্তানের সংসদের নিয়ম অনুযায়ী এরকম প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার জন্য অন্তত ২০ ভাগ সংসদ সদস্যের অনুমতি প্রয়োজন। ফলে অনাস্থা ভোট আয়োজনের প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার জন্য ৬৮ জন সদদ্যের সম্মতি প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে এর চেয়ে অনেক বেশি সদস্য সায় দেন। সব মিলিয়ে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ১৬১ জন।
এরপর প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার ঘোষণা দেন স্পিকার।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে শাহবাজ শরীফ বলেন, ইসলামিক রিপাবলিক অব পাকিস্তানের সংবিধানের আর্টিকেল ৯৫ এর ১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, এই সংসদ ঘোষণা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির ওপর সংসদের কোনো আস্থা নেই। ফলে ৪ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে অফিস ত্যাগ (প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ) করতে হবে।
Leave a Reply