মানুষের শরীরে মেদ জমা হতে হতে মানুষের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে, মেদভুঁড়ি দেখা দেয়, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পায়। যার ফলে কায়িক পরিশ্রম করার যোগ্যতা কমে যায়। কায়িক শ্রম না করার ফলে ব্যক্তি আরও বেশি মোটাসোটা হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে মানুষ এক ধরনের দুষ্টচক্রে পড়ে আরও বেশি মোটা ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পতিত হয়।
ভরপেট খাওয়ার পরে আলস্য এসে ভর করে। আর খাওয়ার পরেই যারা ভাতঘুমে যান, তাদের পেটে মেদ জমার প্রবণতা থাকে সব থেকে বেশি। দীর্ঘক্ষণ বসে যারা কাজ করেন, তাদের পেটেও ধীরে ধীরে মেদ জমে যায়। বাড়তি মেদ শুধু সৌন্দর্যকেই ম্লান করে দেয় না, সেই সঙ্গে নানা রোগও ডেকে আনে।
শরীরে মেদের পরিমাণ বেশি থাকলে হাত, মুখ, পেট এবং উরু এই যায়গা গুলোতেই বেশি জমে। বাড়তি মেদ জমে যাওয়ার আগেই সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আর মেদ যদি জমেই যায়, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়ামে সেটিকে অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে। কোন কারণে মেদ জমছে, এ কারণটিকে চিহ্নিত করে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।
যারা শর্করাসমৃদ্ধ খাবার বেশি খান, তাদের পেটে দ্রুত মেদ জমে। ভাত, পোলাও, বিরিয়ানি, পরোটা, লুচি, মিষ্টি, কোমল পানীয় খাওয়ায় বিধিনিষেধ মানতে হবে।
যারা খাওয়ার পরে দ্রুতই ঘুমিয়ে যান, তাদের খাবার পরিপাক হয় না ঠিকমতো। সঞ্চিত শক্তি খরচও হয় না। ফলে এটাও মেদ জমার খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
যাদের সারাদিনের কাজ চেয়ার-টেবিলেই এবং শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় না, তাদের পেটেও দ্রুত মেদ জমে।
মাখন, পনির, ঘিয়ের মতো চর্বিযুক্ত খাবারে যারা অভ্যস্ত এবং যারা ফাস্টফুডের ভক্ত, তাদের পেটেও মেদ জমে সহজেই।
মেদ কমাতে করণীয়
একবারে বেশি না খেয়ে বারে বারে অল্প অল্প করে খান। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর অল্প কিছু হলেও মুখে দিন।
শর্করাজাতীয় খাবারে যদি পেট না ভরে, শাকসবজি খেয়ে ভরান। সঙ্গে খেতে পারেন যে কোনো টক ফল।
খোসাসহ ফল বেশি করে খান। পেয়ারা, বরই, আমড়া, শসা— এসবে তৃষ্ণা মেটাতে পারেন।
একান্তই মাংস খেতে চাইলে চর্বির অংশ বাদ দিয়ে খেতে হবে। ঝোল কিংবা আলু একদমই বাদ থাকুক।
যে কোনো ধরনের তেলে ভাজা, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার একদমই বর্জন করতে হবে।
পানি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে। পানি শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে মেদ জমতে বাধা দেবে।
পেটের মেদ কমাতে খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি করতে হবে ব্যায়ামও।
নিয়মিত জিমে এলে এবং প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করলে ফলাফলটা খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। আর জিমে যাওয়া সম্ভব না হলে সাঁতার, সাইকেল চালানো, জোরে হাঁটা, দড়িলাফ এগুলো পেটের মেদ ঝরানোর জন্য খুব ভালো ব্যায়াম হতে পারে।
এ ছাড়া লিফট ব্যবহার না করে হেঁটে ওঠা, কিংবা ফ্লাইওভারের নিচ থেকে জোরে হেঁটে ওপরের দিকে ওঠার অভ্যাস গড়লেও মেদ ঝরবে দ্রুত।