ময়মনসিংহের নান্দাইলে সকাল-সন্ধ্যায় চলছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য শীতের পিঠা বিক্রীর ধুম। বছর ঘুরে শীত আসলেই বাজারে বাজারে মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের শীতের পিঠা বিক্রি করে থাকে। ক্রেতাদের সামনা-সামনি চালের গুড়ো দিয়ে তৈরী হয় শীতের ভাপাঁ পিঠা, চিতল পিঠা ও মেড়া পিঠা সহ নানা রকম পিঠা। সেসব পিঠা খাওয়ার জন্য সাথে ফ্রি দিয়ে থাকে আখের গুড়, কাচাঁ মরিচ দিয়ে চেপাঁ তথা সিধলের ভর্তা, সরিষ্যার ভর্তা সহ নানা রকম উপকরণ।
তবে বিশেষ করে সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন বাজারের পিঠা ব্যবসায়ীরা পিঠা তৈরী ও বিক্রীতে খুবই ব্যস্ত থাকে। তেমনি ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম ব্যস্ততম জায়গা হচ্ছে নান্দাইল চৌরাস্তা। যেখানে বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে যাত্রীসাধারন চৌরাস্তা গোল চত্বর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যস্থানে পৌছে। আর চলার পথে ক্ষানিক অবসরে খেতে ভালোবাসে শীতের গরম-নরম পিঠা।
নান্দাইল চৌরাস্তা চত্বরে প্রায় ৫/৭টি পিঠাপুলির দোকান রয়েছে। সেখানে চলছে পিঠা বেচাঁ-কেনার ধুম। পাশাপাশি বিক্রী হচ্ছে শীতের মধ্যে মানবদেহের বলদায়ক পুষ্টিকর খাবার হাঁস-মুরগীর সিদ্ধ করা ডিম। এলাকার বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষ শীতের গরম-নরম পিঠা ও ডিম খেতে ভিড় জমায় দোকানগুলোতে।
মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবমূল্যের বৃদ্ধি থাকায় পিঠা তৈরীতে ভালো খরচ পড়ছে। এতে করে প্রতিটি মেড়া পিঠা তথা গুলি পিঠা ৫ টাকা, ভাপাঁ পিঠা ১০ টাকা এবং চিতল পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে মৌসূমী পিঠা বিক্রেতা আব্দুল গফুর জানান, প্রতি বছরই পিঠা বিক্রী করে থাকি। এবার একটু খরচা বেশী হলেও ব্যবাসা ছাড়েনি, তবে একটু দাম বেশী নিচ্ছি। এরকম কথাই বলেছে পিঠা ব্যবসায়ী সোহেল ও ইসলাম উদ্দিন সহ আরও অনেকেই। তবে এ ব্যবসা করে ভালোই চলে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে শীতের পিঠা খেতে আসা বিশিষ্ট ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম জানান, পিঠা হচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। তবে বাড়িতে আগের মতো আর পিঠা তৈরী করতে দেখা যায় না। তাই অনেকেই বাজার থেকে কিনে নিয়ে যায় বাড়িতে।
বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির নান্দাইল শাখার সভাপতি এবি সিদ্দিক খসরু জানান, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা শীতের পিঠা তৈরী করে বাজারে বিক্রী করে বলেই, আজ এই আধুনিক সভ্যতায় তথা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য শীতের পিঠা ধরে রাখছে তারা। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য শীতের নকশী পিঠা সহ নানা রকম পিঠার স্মৃতি তুলে ধরতে কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে।
Leave a Reply