অনলাইনে পরিচয়, প্রেম অতঃপর বিয়ে। অনেকের অনলাইন প্রেমই বৈবাহিক পরিণতি পেয়েছে এভাবে। কিন্তু আমেরিকার ম্যারেজ ফাউন্ডেশনের একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এক ভিন্নরকম তথ্য। সেখানে বলা হচ্ছে অনলাইনে পরিচয়ের পর যাদের বিয়ে হয়েছে, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা অনেকটা বেশি! বিয়ের প্রথম তিন বছরে এই বিচ্ছেদের সম্ভাবনা ১২ শতাংশ। অন্যদিকে, যারা পরিবার, আত্মীয় বা বন্ধুর সূত্রে পরিচিত হয়েছেন, তাদের বিচ্ছেদের সম্ভাবনা মাত্র ২ শতাংশ। বিয়ের ৭ বছর বাদে এই অনলাইনে আলাপ হওয়ার পর বিয়ে করা দম্পতির বিচ্ছেদের সম্ভাবনা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ শতাংশ, বাকি ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ১০ শতাংশ।
এই সমীক্ষায় মোট ২ হাজার দম্পতির কাছে পৌঁছেছিলেন সমীক্ষকরা, যাদের প্রত্যেকেরই বয়স ৩০-এর উপর। তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ঠিক কোথায় তারা তাদের স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দেখা করেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, শেষ দুবছরে যে যুগলের বিয়ে হয়েছে, তাদের ৩২ শতাংশের প্রথম আলাপ হয়েছে কোনও ডেটিং অ্যাপ বা অন্য কোনও অ্যাপের মাধ্যমে। ১৯৯০-এর দশকে বিবাহিতদের মধ্যে যে পরিমাণ ছিল মাত্র এক শতাংশ, আর ২০০০ –এর দশকে বিবাহিতদের মধ্যে মাত্র সাত শতাংশ।
পাশাপাশি অন্য সমীক্ষায় দেখা গেছে, অনলাইনে সাক্ষাৎ হওয়া যুগলদের ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের সম্ভাবনাই বেশি থাকে। শুধু এমনই নয় বরং ১০ বছরের বেশি বিবাহিতদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, যে যুগলদের কর্মক্ষেত্রে আলাপ হওয়ার পর বিয়ে হয়েছে, তাদের মধ্যেও ২৪ শতাংশকে বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সেখানে অনলাইনে আলাপ হওয়ায় যুগলদের মধ্যে বিচ্ছেদের পরিমাণ ২০ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছেন, অনলাইনে আলাপ হওয়া যুগলদের বিচ্ছেদের মুখে পড়ার কারণ আসলে এরা প্রাথমিক ভাবে একে অপরের ‘অপরিচিত’। তারা বলেছেন, যাদের নিজেদের মধ্যে পারিবারিক সূত্রে বা বন্ধু বৃত্তের সূত্রে কোনও যোগ নেই, তারা একে অপরের অভ্যাস ও বিভিন্ন দিক সম্পর্কে স্পষ্ট জানতে পারেন না। তাদের একে বারে প্রথম থেকে শুরু করতে হয়। তাতে সমস্যা বাড়তে থাকে। তবে বিচ্ছেদের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে প্রথম তিন বছরের মধ্যে। পরের পাঁচ, সাত ও দশ বছরের ক্ষেত্রে এই বিচ্ছেদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। সূত্র: আনন্দবাজার