ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মিসহ তিনজনকে তলব করেছেন আদালত। তাদেরকে আগামী ৩১ অক্টোবর আদালতে স্ব-শরীরে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করা হয়েছে।
তামিমার সঙ্গে নাসিরের বিয়ে অবৈধ ঘোষণা করে এ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালত এ সমন জারি করেন।
আগের স্বামী রাকিব হাসানকে তালাক না দিয়ে ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেন সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মি। এ বিষয়ে মামলা করেন তামিমার স্বামী রাকিব হাসান। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে আজ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নাসির-তামিমার বিয়েটি ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ আগের স্বামীকে তালাক না দিয়েই কেবিন ক্রু তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেন।
আদালতে পিবিআইয়ের প্রতিবেদন দাখিল করার পর তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসানের আইনজীবী নাসির ও তামিমাকে গ্রেপ্তারের আবেদন করেন। আদালত আবেদন না মঞ্জুর করে নাসির-তামিমাকে আদালতে তলব করে সমন জারি করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ডিভোর্স পেপার ছাড়াই অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর (রাকিব হাসান) সঙ্গে ১ নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ৩ লাখ এক টাকা দেনমোহরে বিয়ে এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। তাদের তোবা হাসান নামে ৮ বছরের এক মেয়ে রয়েছে।
এজাহারে আরো জানা যায়, তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত। চাকরির সুবাদে তিনি ২০২০ সালের ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময় ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাকিবের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার সঙ্গে ২ নং আসামির (ক্রিকেটার নাসির) কথিত বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা বাদীর নজরে আসে। বাদী এই ধরনের ছবি দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীতে পত্রিকায় এই বিষয়ে সংবাদ দেখে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জেনে নিশ্চিত হন।
এ ছাড়া তাদের গায়ে হলুদ ও বিয়ে পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথাক্রমে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন হয়। যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, তামিমা বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাসির বাদীকে ফোন করে জানান যে, সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং তার নিকট তামিমা আছেন। বাদীর সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক চলমান থাকাবস্থায় তামিমার নাসিরকে বিয়ে করা যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ। আসামির সঙ্গে তিনি অবৈধ বিয়ের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা নিকৃষ্ট ব্যভিচার।
আসামিদের এরূপ অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে বাদী ও তার শিশু কন্যা মারাত্মকভাবে মানসিক বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এহেন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে যা বাদীর জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন বাদী রাকিব।
Leave a Reply