বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ করা অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী কল্পনা ওরফে বৃষ্টি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। পুলিশ নিহতের মরদেহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আশিক পলাতক রয়েছেন।
নিহতের বাবা মোশারফ হোসেন, ফুফু খোদেজা বেগম, রেখা বেগমসহ পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আমলাপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক মোশারফ হোসেনের কিশোরী কন্যা কল্পনা ওরফে বৃষ্টি (১৫) একই গ্রামের ছবির মিয়ার বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করত। এ সুবাদে পাশের ভাড়াটিয়া আশিক মিয়ার সঙ্গে কল্পনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আশিক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার কল্পনাকে ধর্ষণ করেন। পরে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে কল্পনার পরিবার বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পায়নি। গত ২৬ আগস্ট নিহত কল্পনা বাদী হয়ে আশিককে প্রধান অভিযুক্ত করে তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে।
এদিকে সোমবার গর্ভবতী কল্পনার প্রসব বেদনা উঠলে পরিবারের লোকজন প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে সে মারা যায়।
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাহফুজ হাসান সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করায় সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় আশিক। পরে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে একজনকে গ্রেপ্তার করে আমরা আদালতে পাঠাই।
তিনি আরো বলেন, গর্ভবতী কল্পনা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মা ও শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । তা ছাড়া মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে ।