1. admin@www.gsnnews24.com : admin : সাহিত্য বিভাগ
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

জাতীয়

শিরোনাম

করোনায় শ্রীলঙ্কাকে অর্থ সহায়তা : বাংলাদেশের প্রশংসায় ভারতীয় গণমাধ্যম

  • Update Time : সোমবার, ৩১ মে, ২০২১
  • ২১১ Time View

করোনাভাইরাস মহামারির আঘাতে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। পর্যটন খাতে আয় কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। কমতে কমতে তা এসে ঠেকেছে মাত্র সাড়ে চারশ’ কোটি ডলারে। এ কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে ডলার নিয়ে সংকট কাটানোর চেষ্টা করছে লঙ্কানরা। এ অবস্থায় প্রতিবেশীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ২০ কোটি ডলার মুদ্রা বিনিময়ের (কারেন্সি সোয়াপ) অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ঘটনাকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি মাইলফলক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ নিয়ে আলোচনা চলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে। বাংলাদেশের এই ‘অর্জন’ নিয়ে কী বলছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো? চলুন জেনে নেয়া যাক-

শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাহায্য দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম। তাদের মতে, ঢাকা ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির নির্দশন দেখানো শুরু করে দিয়েছে এবং এর মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো মজবুত করে তুলছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ১৯ মার্চ ঢাকায় আসেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ডলার চেয়ে চিঠি দেন।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। সেখানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে শ্রীলঙ্কাকে ২০ কোটি ডলার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়।

তবে শ্রীলঙ্কাকে দেয়া এই সাহায্য ঠিক ঋণ নয়। ২০ কোটি ডলারের বদলে শ্রীলঙ্কা সমপরিমাণ রুপি বাংলাদেশকে দেবে। এর সঙ্গে কিছু সুদও পাবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বিশদ একটি প্রতিবেদন করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, এযাবৎ বাংলাদেশকে অর্থসাহায্যকারী দেশ হিসেবে দেখা হয়নি। এটি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দরিদ্র’ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এবং এখনো শত শত কোটি ডলার আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু গত দুই দশকে বাংলাদেশ অনেকটা এককপ্রয়াসেই নিজেকে টেনে তুলেছে এবং ২০২০ সালে তারা হয়ে ওঠে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি।

গত বছর বাংলাদেশের অর্থনীতি বেড়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, আর ২০২১ সালে তা ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশটি লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। তাদের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ভারতের চেয়েও বেশি।

শ্রীলঙ্কাকে অর্থসাহায্য করার ব্যাপারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির বক্তব্য, এটি সম্ভবত বাংলাদেশের জন্য প্রথমবার, ফলে স্বাভাবিকভাবেই তা একপ্রকার মাইলফলক।

ভারতের প্রভাবশালী সংবাদপত্র দ্য হিন্দু লিখেছে, শ্রীলঙ্কার মূল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাতে মহামারির মারাত্মক আঘাত লাগার পরিপ্রেক্ষিতে এই মুদ্রা বিনিময় হচ্ছে। গত এপ্রিলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৪৫০ কোটি ডলারে, যা চলতি বছর তাদের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে মোট কিস্তির প্রায় সমান।

সংবাদপত্রটির তথ্যমতে, গত বছরের মে মাসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে ১১০ কোটি ডলার মুদ্রা বিনিময়ের অনুরোধ জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টির অনুমোদন দেয়নি ভারত। বিপরীতে, বাংলাদেশ মাত্র দুই মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে ওঠা তহবিলের অনুমোদন দিয়েছে।

শুধু শ্রীলঙ্কাকেই নয়, করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ডুবন্ত ভারতে বাংলাদেশের ওষুধ সহায়তা পাঠানোর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট। তাদের কথায়, মহামারির মধ্যে ভারতকে অন্তত দুইবার সাহায্য পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।

গত ১৮ মে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের মেডিক্যাল সুরক্ষা উপকরণ হস্তান্তর করেছে ঢাকা। এর আগে, গত ৬ মে ভারতকে ১০ হাজার ভায়াল রেমডেসিভির দিয়েছিল বাংলাদেশ।

দ্য প্রিন্ট বলছে, চলতি অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে চলা বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের নজর কেড়েছে। গত এপ্রিলে মার্কিন চেম্বার অব কমার্স যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল চালু করেছে, যার লক্ষ্য বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য মার্কিন বিনিয়োগকারী খোঁজা এবং দ্বিমুখী বাণিজ্য বৃদ্ধি করা। এমনকি ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ পাকিস্তানের কাছ থেকেও প্রশংসা অর্জন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।

দিল্লি-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজ (আরআইএস)-এর অধ্যাপক প্রবীর দে’র মতে, বাংলাদেশের এমন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে পাওয়া জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্সেস বা জিএসপি সুবিধার।

দ্য প্রিন্টকে তিনি বলেন, এর কারণ ইইউর জিএসপি স্কিমে চলমান সহায়তার কারণে রফতানির মাধ্যমে যথেষ্ট আয় করতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা। পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে রেমিট্যান্সও গ্রহণ করছে বাংলাদেশ।

প্রবীর দে বলেন, বাংলাদেশ এখন আসিয়ানের প্রধান দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য করছে এবং জোটের অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও বাণিজ্যিক চুক্তি ও সংযোগ প্রকল্প চালুর চেষ্টা করছে। ভারতীয় এ বিশ্লেষকের কথায়, বাংলাদেশ হচ্ছে এশিয়ার নতুন রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews