রংপুর সদর উপজেলার খলেয়াতে ঘাঘট নদীর ডানতীরের ৬০০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভাঙন রোধসহ হাজার হাজার বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলিন হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
বুধবার বিকেলে বাঁধ নির্মাণ কাজ উপলক্ষে সদরের খলেয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিড়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন, বর্তমান সরকার নদী রায় বিভিন্ন পদক্ষেপে বাস্তবায়ন করে আসছে। বিশেষ করে কৃষি নির্ভর উত্তরাঞ্চলের জনজীবন রক্ষায় নদী খনন, বাঁধ নির্মাণ, বালু উত্তোলন বন্ধসহ দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই প্রকল্প এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। খলেয়াতে ঘাঘট নদীর ডানতীরে ৬০০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ শেষ হলে এখানকার মানুষেরা উপকৃত হবেন।
তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙন রোধসহ শিক্ষা, ফসলি জমি, বসতবাড়ি রক্ষা পাবে। এবছরের মধ্যেই তিন ধাপে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে। এতে যাতে কোন রকমের অনিয়ম না হয়, সেজন্য স্থানীয়দের সজাগ থাকতে হবে। কাজের কোয়ালিটি কোয়ান্টিনিতে কমবেশি হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেয়া হবে না।
প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নির্মাণ কাজ হচ্ছে। এতে ৬০০ মিটারের মধ্যে দক্ষিণ বিড়াবাড়ীতে ১৯০ মিটার, উত্তর বিড়াবাড়ীতে ১৩০ এবং বিড়াবাড়ী ব্রিজ সংলগ্নে ২৮০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ করা হবে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এ কাজের বাস্তবায়ন করছে বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ।
রংপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- রংপুর পওর সার্কেল-১ বাপাউবো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুস শহীদ, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান মিলন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজলী বেগম, খলেয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম লাভলু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের উত্তর অংশে প্রবাহিত নদী ঘাঘট। রংপুর বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘটের দৈঘর্য ২৩৬ কিলোমিটার। এর পানিপ্রবাহমাত্রা অবস্থাভেদে ৫০ থেকে ২৫০০ কিউসেক।
রংপুরের মিঠাপুকুর ও সদর উপজেলার ২ সীমানার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদী। আয়তনের দিক থেকে এ নদীর তেমন প্রশস্ত ও গভীরতা না থাকলেও ভাঙন বাড়ছে। স্রোতের গতিতে ঘাঘট খুব খরস্রোতা নয়। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়াসহ পরিকল্পিত ভাবে খনন না হওয়ায় এ নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে হাজার হাজার বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলিনের হার। এই ৬০০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ হলে নদী ভাঙন রোধসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট রাস্তা পাবে।