নির্মাণের ৬ মাস পার হতে না হতেই কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের এওচিয়া থেকে খরখরিয়া পর্যন্ত পাকা করণ হয়েছিল ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সড়কটি। এরইমধ্যে সড়কের শাহাপুর গ্রামের ভিতরে প্রায় শত মিটার সড়কের অংশ ভেঙে গাছ-পালা সহ পুকুরের ভিতর ধসে পড়েছে। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে সড়ক নির্মাণের ৬ মাসেই তা ভেঙে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে চলতি বছরের এপ্রিল দিকে সড়কটি পাকা করার কাজ শেষ করা হয়েছে । দুই কিঃ ৪শ মিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ১৩হাজার ৫৮৩ টাকা। জেলা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পেয়েছে মেসার্স শাহাদাৎ ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণ করে। সড়কটি নির্মানের ফলে এলাকায় গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
সরেজমিন দেখা গেছে, নবনির্মিত পাকা সড়কের পাশ দিয়ে রয়েছে শাহপুর সংযোগ সড়ক সংলগ্ন পুকুর। সড়কটি পাকা করার কাজের সময় ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি স্থানীয় সরকার দপ্তর ও ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পুকুরের পাশে সুরক্ষা বাঁধ (গাইডওয়াল) ছাড়াই দায়িত্বহীনতা ও অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় সড়কটি টিকসই হয়নি। এবছরের থেমে থেমে অতি বর্ষণে এ সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও আবার পাকা সড়কের কিছু অংশ ধসে গাছ-পালা সহ পুকুরের পেটে চলে গেছে। এ সড়কের পাশে কয়েক দিন ধরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় কয়েক দিন ধরে অবিরাম বর্ষণে সড়কটির শাহপুর নামক স্থানে রাস্তার একটি অংশের প্রায় শত মিটার ভেঙে পুকুরে ভিতর এবং বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের ফলে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। ওই সড়ক দিয়ে বর্তমানে যান চলাচল করতে পারছে না। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। এর পরও ওই সড়কের আরো প্রায় অংশ পাশ্ববর্তী খালে -পুকুরে পেটে ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এই সড়কপথে ৬/৭টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে আসছে। এলাকাটি কৃষিতে সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গ্রামগুলোর হাট-বাজার থেকে কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যান। সড়কটি ভেঙে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সব ব্যবসায়ীরা সড়কটি ব্যবহার করতে পারছেন না। এতে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার সহ দায়িত্বহীনতার কারনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এস ও) মিজানুল হকের সাথে ওই সড়কটির নির্মাণ কাজের তদারকির ব্যাপারে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করলে ও উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন ভিন্ন কথা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আল-আমিন সর্দ্দার বলেন, সড়কটি নির্মাণ শেষে কয়েক মাসের মাথায় শাহাপুর অংশের কিছু অংশ ভেঙ্গে পুকুরে পড়েছে বলে শুনেছি। তবে স্থানীয় মৎস চাষীদের অসচেতনতা এবং টানা বৃষ্টির কারণে সড়কটি ভেঙ্গে গাছ পাল সহ পকুরে ধসে পড়েছে।
Leave a Reply