যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাইনর (ক্ষুদ্র) মেরামতের কাজ না করেই ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা শিক্ষা কর্মকর্তার হিসাবে স্থানান্তরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরকারি বরাদ্দের টাকা জুনের মধ্যে খরচের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেটি মানা হয়নি। হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বিদ্যালয়ে মেরামত কাজ হয়নি। কাজ না করেও কীভাবে শিক্ষা কর্মকর্তার হিসাবে টাকা স্থানান্তর করা হল, সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম বলেন, করোনার কারণে হয়তো কাজ ঠিকমতো করতে পারেনি। তবে কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।
জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিবি-৪) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে যশোরের বাঘারপাড়ার ৩৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতে ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে ২৯টি বিদ্যালয়কে দুই লাখ করে ৫৮ লাখ ও ৯টি বিদ্যালয়কে দেড় লাখ করে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৯ সালের গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর এ বরাদ্দ দেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, বরাদ্দের টাকা অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে ব্যয় করার বিধান রয়েছে।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মেরামত করা হয়নি। জুন ক্লোজিংয়ের সময় তড়িঘড়ি করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। জুলাই মাসের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ে মেরামত কাজ হয়নি। কাজ না করে এভাবে কর্মকর্তার হিসাবে টাকা স্থানান্তর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বাঘারপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক বরাদ্দের টাকা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সরকারি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। আপনি খোঁজ নেন দেখবেন সারা দেশের ৫৫২টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হিসাবেই এ টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানে অনিয়মের সুযোগ নেই। আর এটি আমার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব নয়।
তিনি বলেন, বরাদ্দকৃত ৩৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটির কাজ শেষ হয়েছে, বাকিগুলো চলমান রয়েছে। কাজ শেষ হলে উপজেলা প্রকৌশলীর প্রত্যয়নপত্র পেলে বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রধান শিক্ষকের যৌথ হিসাবে টাকা স্থানান্তর করা হবে। জানতে চাইলে বুধবার অবসরে যাওয়া বাঘারপাড়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, এটা নিয়মের মধ্যেই আছে। আমার জানামতে, বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ উপজেলায় এমন হয়েছে। টাকা এসেছে ২০ জুনের পর, জুন মাসের মধ্যেই খরচ শেষ করবে কীভাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুলে কাজ হয়নি বলেই শিক্ষা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে। এখন দেখেন তারা কাজ না করে টাকা তুলছে কি না।
সূত্র: যুগান্তর
Leave a Reply