শিমের বাগানে ভরে গেছে মাঠ। সবুজের ওপর লাল-বেগুণী ও সাদা ফুলের সমাহার। যেন সবজির রাজত্বের রাণি শিম, তাকে অন্য ফসলের মধ্যে খোজঁ মেলা ভার। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও এখানকার শিম রপ্তানি হচ্ছে বিভিন্ন উপজেলায়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, নান্দাইল উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র চরবেতাগৈর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি শিমের আবাদ হয়। এছাড়া উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়ন, বীরবেতাগৈর, আচারগাঁও, খারুয়া, শেরপুর ও রাজগাতিও শিম চাষ হয়ে থাকে। তবে চরবেতাগৈর ইউনিয়ন, রাজগাতি, গাংগাইল ও আচারগাঁও ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে শিমের আবাদ হয়েছে। এসব এলাকায় যেদিকে চোখ যাবে, সেদিকেই শুধু শিম আর শিম। কৃষকের বাড়ির আঙিনা পেরিয়ে বিস্তীর্ণ মাঠেও চাষ হচ্ছে শিম চাষ। বর্তমান সময়ে অনুকূল আবহাওয়ায় শিমের ভালো ফলন এবং বাজারেও উচ্চমূল্য পাওয়ায় চাষিরা বেশ খুশি। শিম চাষের সঙ্গে জড়িত দুই শতাধিক কৃষক। চলতি বছর কৃষক দেশি, বারি, নলডুক এবং স্থানীয় উন্নত জাতের শিম চাষ করেছেন। চরলক্ষ্মীদিয়া গ্রামের শিম চাষি আব্দুল জলিল ও আব্দুর রাশিদ জানান, “৫ কাঠা জমিতে শিম চাষ করার পর দেড় থেকে দুই মাস পরেই প্রতি সপ্তাহে ৩/৪ হাজার টাকার শিম তুলে বিক্রি করছেন।
যেখানে এক সীজন ধান চাষ করলে পাওয়া যেত মাত্র ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। আর শিম আবাদে ৪/৫ মাসেই খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করা যাচ্ছে।” এছাড়া শিম চাষি জালাল সরকার, সিদ্দিক, দুলাল মিয়া, মিলন মিয়া ও মুজিবুর মেম্বারসহ আরও শতাধিক কৃষক শিম চাষ করে বদলে ফেলেছেন তাদের নিজেদের ভাগ্য। এ বছর শিমের বাজার বেশ ভালো। প্রথম দিকে কেজি প্রতি বাজার দর ৯০ থেকে ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ১ মণ শিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে। শিম চাষের জন্য ভালো বীজ, শুকনো উর্বর মাঠ এবং তার উপর মাচা তৈরী ও নিয়মিত তার পরিচর্যা। তবেই ভালো ফলনে বেশী লাভ করা যায়। নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এ অঞ্চলের জমি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। লাভজনক হওয়ায় এ এলাকার কৃষক শীত মৌসুমে ব্যাপকভাবে শিম চাষ করে থাকেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সুষ্ঠু পরিচর্যায় শিমের ফলন ভালো হয়েছে। শিম চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
Leave a Reply