বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন মুস্তফা কামাল।
বৈঠকে এক সাংবাদিক জানতে চান, এত এজেন্সি আছে সরকারের, নিয়ন্ত্রক সংস্থা আছে, তাহলে তাদের কাজ কী-জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এজেন্সিগুলো (কাজ) করবে তখনই, আইনটা যদি শক্তিশালী হয়। আইনে যদি কোনো ত্রুটি থাকে, তাহলে পারবে না। আমি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি, তিনি এই বিষয়টি দেখবেন। আইনটাকে শতভাগ কমপ্লাইন্ট হতে হবে। যদি আরও শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করা লাগে, আমরা সেটাও করে দেব।’
ডিএসইসি সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় পরিচালনা পর্ষদ পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ব্যবস্থা, বাজারে অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি, রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনয়ন, টি-বন্ডের লেনদেন যথা শিগগির চালুকরণ, বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ করা, গ্রামীনফোন এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বন্দ্বের দ্রুত নিষ্পত্তি, ডিএসই এবং পুঁজিবাজারের লেনদেনের ওপর কর হ্রাস, অডিট রিপোর্টের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইসিবি ও অন্যান্য সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি তুলে ধরেন।
বৈঠকে এসব দাবি-দাওয়ার বিষয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। মুস্তফা কামাল বলেন, ‘তাদের একটা দাবি ছিল-আমরা তাদের ট্যাক্স কেটে নিই। ওই অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্সের ওই হারটা আমরা কমাতে পারি কি না। আমরা বলেছি, যতটুকু সম্ভব আমরা বিবেচনা করব।’
তিনি বলেন, ‘তাদের আরেকটা দাবি ছিল, এক্সেস টু ব্যাংকিং ফাইন্যান্স। যেমনিভাবে কোনো ক্লায়েন্ট ব্যাংকে গিয়ে টাকা বড় করতে পারে, ঠিক তেমনিভাবে পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তারাও সেই সুযোগটা যেন পায়। আমরা বলেছি, আমাদের জানামতে, এই মুহূর্তে দেশের কারও জন্যই রেস্ট্রিকশন নেই যে, ব্যাংকে যেতে পারবে না। ব্যাংক ক্লায়েন্ট রিলেশনশিপের ভিত্তিতে অন্যরা যেভাবে লোন পায়, সুযোগ-সুবিধা পায়, পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তাদের জন্যও সেই সুযোগ-সুবিধা থাকবে। সিকিউরিটি দিতে হবে।’
‘পুঁজিবাজারের আরও ভালো দিক হলো, অতীতে তারা লোন নিয়ে সরকারের সেই টাকা শোধ দিয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি যে, তাদের জন্য আরও সুযোগ ভালো। সেজন্য আমরা বলেছি, তাদেরকে অ্যালাউ করা হবে।’
‘আমি তাদের কাছে বললাম যে, আমরা কারেন্সি ডিভ্যালু করব না। কারেন্সি ডিভ্যালু করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের রেমিট্যান্স খাতও বলা হচ্ছিল ডিভ্যালু করার জন্য। রেমিট্যান্স খাতে আমাদের ডিসেম্বর মাসে গ্রোথ হলো ৪০ শতাংশ। এক মাসে একখাতে এত গ্রোথ (প্রবৃদ্ধি), এটা ইতিহাস। এটা আর কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা এই খাতকে ২ শতাংশ ইনসেনটিভ (প্রণোদনা) দিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা এই সক্ষমতা অর্জন করেছি। সুতরাং কোনো খাতেই কারেন্সি ডিভ্যালু করার সম্ভাবনা নেই’-যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তাদের দাবি, কিছু ভালো শেয়ার বাজারে আনার জন্য। আমি আশ্বস্ত করেছি, দিনক্ষণ দিয়ে বলতে পারব না কবে নিয়ে আসব। যেসব সরকারি শেয়ারের মৌলিক এলাকা ভালো, সেসব শেয়ার বাজারে নিয়ে আসব।’
Leave a Reply