এবার আগ্রহী প্রার্থীদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে ছোটাছুটি, তদবির নেই। কে পদ হারাবেন আর কে পদে বহাল থাকবেন এটিই এখন আলোচ্য বিষয়। তাই কেউ কাউকে সুপারিশ করে কাজ হবে না এ বিষয়টি সম্পর্কে সবাই নিশ্চিত। দলকে ঢেলে সাজাতে এবার দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় অবস্থানে। একমাত্র শেখ হাসিনার ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে। এছাড়া কে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবেন, কে থাকবেন, কে থাকবেন না এসব কিছুই নির্ভর করে দলীয় সভাপতির ওপর। কিন্তু এবার সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে তাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও শেখ হাসিনা বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান চালাবেন এটা স্পষ্ট।
এমন প্রেক্ষাপটে হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এছাড়া আগের সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার কোনো বিদেশি অতিথি থাকছেন না।
সম্মেলন প্রস্তুতির অভ্যর্থনা উপকমিটির সভায় এ কথা জানান ওই উপকমিটির আহ্বায়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ওই সভায় তিনি বলেন, যেহেতু আগামী বছরই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের বিষয় রয়েছে, সেখানে আমরা বছরজুড়ে নানা আয়োজনে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাব। তাই সম্মেলনে আলাদা করে কোনো বিদেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তবে দেশেই বিভিন্ন দূতাবাসে যারা রয়েছেন তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সামনের চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে এবং সংগঠনকে গতিশীল করতেই এবারের সম্মেলন। জনগণই আমাদের শক্তি জনগণই আমাদের শক্তির উৎস। এ ধারাবাহিকতায় জননেত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন।
আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, যারা কমিটিতে থেকে যোগ্যতার, দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারেনি, যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি, অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তারা তো বাদ পড়বেই। বাদপড়া বা নতুন যুক্ত হওয়া এটা প্রতি সম্মেলনেই হয়। তবে এবার এই বিষয়গুলো বিশেষভাবে দেখা হবে। সব জায়গাতেই এটা অনুসরণ করা হবে। জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়েও এই নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সারা দেশের বিতর্কিত নেতাদের তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকায় কয়েক হাজার নেতার নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এরা যাতে কমিটিতে আসতে না পারে সেজন্য জেলায় জেলায় এই তালিকা পাঠানো হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এবারের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত নতুন কমিটিতে বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক পদগুলোসহ বিভিন্ন সম্পাদকের পদে ব্যাপক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পদে নতুন এবং তরুণরা অগ্রাধিকার পাবেন। এসব পদের অনেককেই শুধু পদ থেকে নয়, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। কারো কারো পদ অবনতি হয়ে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে স্থান পেতে পারে। তবে দু’একজনের পদোন্নতি হতে পারে।
বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে যারা আছেন তাদের কেউ কেউ পদ হারাতে পারেন। তবে দু’একজনের পদোন্নতি হয়ে সভাপতিম-লীতে স্থান পেতে পারেন। সভাপতিমণ্ডলীতে যারা আছেন সেখান থেকেও অনেকেই বাদ পড়বেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ এই ফোরাম থেকে কাউকে কাউকে সরিয়ে উপদেষ্টাম-লীতে স্থান দেওয়া হতে পারে। আবার সভাপতিমণ্ডলীর কেউ কেউ কেন্দ্রীয় রাজনীতি থেকে বাদও পড়তে পারেন।
বাদ পড়বেন বর্তমান অনেক কার্যনির্বাহী সদস্যও। সবমিলিয়ে বর্তমান কমিটির অর্ধেকের মতো বাদ পড়তে পারেন বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন।
সূত্র আরো জানায়, এই বিষয়গুলো নিয়ে বর্তমান কার্যনির্বাহী সংসদে (কেন্দ্রীয় কমিটি) যারা আছেন তাদের অনেকের মধ্যেই অস্বস্তি আছে। কারো কারো মধ্যে পদ হারানোর আশঙ্কা থেকে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে অন্যান্য বারের সম্মেলন থেকে এবার পরিস্থিতি একটু আলাদা। সম্মেলনকে সামনে রেখে বিভিন্ন পদে আগ্রহী প্রার্থীরা প্রচারমুখী হয়ে উঠেন। এবার সেটা দৃশ্যমান নয়।
সূত্র: প্রতিদিনের সংবাদ
Leave a Reply