সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সড়কে শৃঙ্খলা জোরদার ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিতে পরে আরও আট সদস্যকে নেওয়া হয়। কমিটি সাতটি সভা করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। প্রতিবেদনে ১১১টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আশু করণীয় ৫০টি, স্বল্পমেয়াদি ৩২টি ও দীর্ঘমেয়াদি ২৯টি। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এই আইন তৈরিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িত ছিলেন। নতুন এই উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দূরপাল্লার চালকদের জন্য খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও রংপুরে জাতীয় মহাসড়ক বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এ চারটি জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। পরে সংখ্যা আরও বাড়বে। এ ছাড়া ভুয়া চালকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ লাখ চালককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যারা ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে মহাসড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন তাদের উদ্বুদ্ধ করা হবে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আসার জন্য। এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দক্ষ প্রশিক্ষকের সংকট রয়েছে। এজন্য ১ হাজার ৪০০ জনকে প্রশিক্ষকের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ৮০০ জনকে ট্রেনিং দিচ্ছে সেনাবাহিনী এবং বাকি ৬০০ জনকে ট্রেনিং দিচ্ছে ব্র্যাকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। সড়ক নিরাপত্তা আইন-২০১৮ বাস্তবায়ন হলে সড়কে দুর্ঘটনা কমবে বলে আমরা আশাবাদী। এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক সামছুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের দেশে নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নে আগ্রহ ব্যাপক থাকে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ে। চালকরা পাঁচ ঘণ্টা চালানোর পর বিরতি পাবেন কি না এই মনিটরিং কে করবে সেটা নির্ধারণ করা জরুরি। অবকাঠামো দিয়ে সিস্টেমের দুর্বলতা ঢাকা যায় না। তিনি আরও বলেন, মালিকপক্ষ চালকদের বিশ্রাম নেওয়ার সুবিধা নিশ্চিত করছে কি না সেটা দেখতে হবে। নয়তো রুটি-রুজির জন্য চালকরা বাধ্য হবেন বিশ্রাম ছাড়াই চালাতে। আর এসব বিশ্রামাগার পরিণত হবে মাদকসেবী, জুয়াড়িদের আড্ডাখানায়।