১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জনাব রফিক উদ্দিন ভূইয়া নান্দাইলের উপজেলার ঐতিহাসিক চন্ডীপাশা স্কুল মাঠে বিশাল জনসভার আযোজন করেন। বঙ্গবন্ধু সহ তৎকালীন আওয়ামীলীগের বর্ষিয়ান নেতারা সভামঞ্চে বসে আছেন। অন্যদিকে নান্দাইলের নুরুল আমিন ছিলেন পূর্বপাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী। আওয়ামীলীগের জনসেবায় নুরুল আমিনের লাঠিবাহিনীর ভয়ে কেউ কোরান তেলওয়াতে রাজি হচ্ছিলেন না। অনেক চেষ্টার পরও যখন কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন মাইকে কোরান তেলওয়াত করার জন্য উন্মুক্ত ভাবে ঘোষণা করা হলো।
নান্দাইল এর কাকচর নিবাসী মরহুম কোলির বাপের পুত্র টগবগে যুবক, দীর্ঘদেহের এক তরুণ মৌলানা আব্দুল মজিত খান কোরান তেলওয়াতের জন্য সভাস্থ থেকে উঠে দাঁড়ালেন।সভামঞ্চে অস্হিরতা কেটে গেল। বীর দর্পণে সভামঞ্চে এসে দাঁড়ালেন মৌলানা আব্দুল মজিত খান। নির্ভয়ে কোরান তেলওয়াত করলেন। তাঁর সাহসিকতার জন্য, বঙ্গবন্ধু নিজ মুখে তাকে ” জয় বাংলা মৌলভী ” উপাধীতে ভূষিত করলেন। পরবর্তীতে মৌলানা সাহেবকে হিন্দুদের নেতা বলে, নুরুল আমিনের পেটোয়া বাহিনী মসজিদের ইমামতী চাকরী থেকে চাকরী চ্যুত করে।
সেই জয়বাংলা মৌলভী আজ বার্ধক্যজনিত কারনে ; তাঁহার শরীরের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন রোগে বাসা বেঁধেছে। চিকিৎসা করানোর মতো অর্থ তাঁর নেই। তবুও বঙ্গবন্ধুর নাম বুকে নিয়ে বাঁচতে চায়। তাঁর চিকিৎসার জন্য হৃদয়বান ব্যক্তিদের হাত প্রসারিত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ রইলো।
বঙ্গবন্ধুর জীবন দশায় ইচ্ছে করলে তিনি অনেক কিছু আদায় করতে পারতেন। ত্যাগীরা এমনিই হয়, ” দিতে জানে, নিতে জানে না। ”
লেখক ও কলামিস্ট : সাইদুর রহমান।