1. admin@www.gsnnews24.com : admin : সাহিত্য বিভাগ
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন

জাতীয়

শিরোনাম

শরীফকে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় যে কারণে গ্রেফতার হলেন মিন্নি

  • Update Time : বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৯
  • ১৬৪ Time View
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

জিএসএন ডেক্স: বরগুনার রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

মিন্নিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার বরগুনা পুলিশলাইনে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। এ কারণে তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

মামলার প্রধান আসামি মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানোর কারণ হিসেবে পুলিশ সুপার আরও বলেন, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ ও অন্যান্য সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। তাই রাত ৯টার সময় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যায় জড়িত থাকা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় পুলিশ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার করল। তাকে রিমান্ডে নেয়া হবে কিনা প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, মামলার সঠিক তদন্তের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড চাওয়া হবে।

একই সময়ে পুলিশ সুপার জেলা বিশেষ শাখা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং সুদীর্ঘ সময়ে পাওয়া তথ্যাদি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে রাত ৯টায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডে মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত এমন তথ্য দিয়ে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ব্যক্তিগত কারণ ও আক্রোশ থেকে এই রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রিফাতের স্ত্রী মিন্নি সরাসরি সম্পৃক্ত। এ জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত শনিবার রাত ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। তিনি রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

তিনি বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিল। ওই বিয়ে গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করে সে। বিষয়টি আমাদের জানায়নি মিন্নি এবং তার পরিবার। কাজেই রিফাত শরীফ হত্যার পেছনে মিন্নির মদদ রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলে সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে।

দুলাল শরীফ আরও বলেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের বিষয়টি মিন্নি ও তার পরিবার সুকৌশলে গোপন করেছে। নয়ন বন্ডের স্ত্রী থাকাবস্থায় আমার ছেলে রিফাতকে বিয়ে করেছে মিন্নি। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের বাসায় যাওয়া-আসা করত। নিয়মিতভাবে নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করত সে।

বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী তার বাবা আবদুল হালিম দুলাল। তিনি প্রথমে মামলায় মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন। পরে তার অভিযোগ আমলে নিয়ে মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানের নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টায় মিন্নিকে পুলিশের গাড়িতে বাবার বাড়ি দক্ষিণ মাইঠা থেকে বরগুনা পুলিশলাইনসে আনা হয়।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর এ সময় সঙ্গে ছিলেন। সূত্র জানায়, বেলা ১১টা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহমেদ (পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাজমুল আহসান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. হুমায়ূন কবির তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

এর মধ্যে নাজমুল আহসান ও হুমায়ূন কবির দুপুর ২টায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান। বিশেষ কাজে বরিশালে যাচ্ছেন বলে তারা যুগান্তরকে জানান।

দুপুর ১২টায় তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছিলেন পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মিন্নি রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী। তাই তাকে আসামিদের শনাক্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশলাইনসে নিয়ে আসা হয়েছে।

তাকে এখন পর্যন্ত আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। রাতে সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, জিজ্ঞাসাবাদে কী বলেছে মিন্নি। জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্তের স্বার্থে এখন এসব কথা জানানো সম্ভব নয়।

নাজমুল আহসান যুগান্তরকে বলেন, মামলার আসামি বা সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য কমিটি রয়েছে। পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন কমিটির প্রধান। আমি ছাড়া অন্য সদস্যরা হলেন- মো. তোফায়েল আহমেদ, মো. শাহজাহান, পুলিশ পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন, মো. হুমায়ূন কবির ও কোর্ট পরিদর্শক বাবুল আকতার।

জিজ্ঞাসাবাদে মিন্নি কী বলেছেন- জানতে চাইলে হুমায়ূন কবির যুগান্তরকে বলেন, তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে মিন্নি আজ (মঙ্গলবার) পুলিশ হেফাজতে থাকছে। মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবিতে শ্বশুর ও মামলার বাদী আবদুল আলীম দুলাল শরীফ শনিবার রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।

পর দিন সকালে ‘বরগুনার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে মানববন্ধনেও ছিলেন তিনি। দুলাল শরীফ দাবি করে আসছেন, ছেলে হত্যায় মিন্নি যুক্ত রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। মঙ্গলবার মিন্নিকে গ্রেফতারের খবরে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে দ্বিতীয় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হত্যায় মিন্নির সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

পুলিশ সুপারের বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়, এ পর্যন্ত এ মামলায় এজাহারনামীয় সাতজন ও সন্দিগ্ধ সাতজনসহ ১৪ জনকে (মিন্নিসহ ১৫ জন) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১০ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, ৩ জন রিমান্ডে আছে।

সূত্র: যুগান্তর

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
Theme Customized By BreakingNews