শাহজাহান ফকির: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পন্ডিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪ জন শিক্ষকের জাতীয়করন এবং অবৈধ উপায়ে চার জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল চেয়ে বিজ্ঞ হাই কোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। নান্দাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও গাংগাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম রফিক কর্তৃক দায়েরকৃত রিট সূত্রে জানাযায়, ২০১৩ সনের ২৪ জানুয়ারি সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল অব: আব্দুস সালামের উপস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম ভূইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, পন্ডিতপুর গ্রামে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু নেই। পরবর্তী সময়ে ৭ই মে ২০১৪ ও ১৫ই মে ২০১৬ইং তারিখে নান্দাইল উপজেলা পরিষদ সভায় সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আবেদীন খাঁন তুহিনের উপস্থিতিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরীর স্বপনের সভাপতিত্বে ৫নং গাংগাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুজ্জামান খোকনের প্রস্তাবে উক্ত গ্রামে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়, কর্মরত শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী নাই বলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। পরবর্তী সময়ে একটি চক্র কাগজপত্র সৃজন করে ২রা এপ্রিল ২০১৪ তারিখে বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করন ভূক্ত দেখানো হয় এবং ১২ই জুন ২০১৮ বিদ্যালয়টিতে দাখিল পাস ৩ জন মহিলা সহ একজন শিক্ষকের জাতীয়করণের আওতায়ভূক্ত দেখানো হয়। বিষয়টি এলাকায় প্রকাশ হলে সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আবেদীন খাঁন তুহিন বিদ্যালয়টি সরজমিন পরিদর্শন করে উক্ত বিদ্যালয়ের ভূয়া শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করে সরকারিভাবে চার জন শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী সহ সচিব এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্থানে ২রা অক্টোবর ২০১৮ইং পর্যন্ত সংসদ সদস্যের প্যাডে ৪টি ডিও প্রদান করেন। প্রতিটি ডিওতে বিদ্যালয়টিকে রেখে চারজন শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবী জানান। বিষয়টি তৎসময়ে দেশের অধিকাংশ জাতীয় দৈনিক যুগান্তর/প্রথম আলো/কালের কন্ঠ/ইত্তেফাক/সমকাল/দিনকাল সহ অন্যান্য সংবাদপত্রে একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে। এতদ সত্বেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে উক্ত বিষয়ে সরজমিন কোন তদন্ত অনুষ্ঠিত হয় নি। মামলা সূত্রে আরও জানাগেছে, বিদ্যালয় জাতীয়করণের বিষয়ে শর্ত ছিল ২০১২ সনে প্রাথমিক সমাপনী পরিক্ষায় ছাত্রছাত্রী অংশ গ্রহন করতে হবে, পাঠদানের সরকারি অনুমতি থাকতে হবে। শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করনের ক্ষেত্রে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ অবশ্যই থাকতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে আওয়ামীলীগ নেতা মো. রফিকুল ইসলামের চাহিদা পত্রের বিপরীতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী লিখিতভাবে জানান, শিক্ষক নিয়োগ ও জাতীয়করনের বিষয়ে উপরোক্ত নীতিমালা মানা হয় নাই এবং বিদ্যালয়টিতে ২০০৮ সন থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারী কোন অনুমোদিত কমিটি ছিল না। উপরোক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে রিটকারী বিজ্ঞ হাই কোর্টে সুবিচার চেয়ে একটি রিট মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৫৪৭৯/২০১৯। মামলাটি বর্তমানে মহামান্য হাই কোর্টে শুনানীর অপেক্ষায় কার্য তালিকাভূক্ত রয়েছে। নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আলী সিদ্দিকী জানান, উক্ত শিক্ষকদের নামে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বেতন ভাতাদি ছাড় করা হলেও মহা মান্য হাই কোর্টে রিট আবেদন শুনানীর অপেক্ষা থাকায় বেতন ভাতা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।