লেখক ও কলামিস্ট:- সাইদুর রহমান : তথাকথিত কথা ” শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড ” শিক্ষাই একটা জাতি বা অঞ্চলকে আলাদা ভাবে পরিচিত করে তুলতে পারে। প্রযুক্তির বা উন্নয়নের প্রতিযোগিতার দৌড়ে শিক্ষাই অঞ্চল ভিত্তিক উন্নয়ন দিতে পারে। আমরা যদি চিন্তা করি ভিন্নরূপে আমার ওয়ার্ডে শিক্ষার হার কেমন? ইউনিয়নে কেমন? উপজেলায় কেমন? তারপর সব মিলে সারা উপজেলা মিলে সর্বস্তরে শিক্ষার মান কি বৃদ্ধি পাচ্ছে ? বৃদ্ধি পেলে বেশী উল্লসীত হওয়া যাবে না। আরও উন্নতির জন্য কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষার সূচক যদি হয় প্রতিনিয়ত নিন্মগামী হয় তাহলে, ঐ অঞ্চল রসাতলে চলে গেছে ধরে নিতে হবে। আমাদের উপজেলার শিক্ষার সূচন দুঃখজনক ভাবে প্রতি বছরেই অবনতি হচ্ছে।
আমাদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নান্দাইল উপজেলা। এখানে ভাষা সৈনিক খালেক নেওয়াজ খান, বর্ষীয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তি, ভাষা সৈনিক, বঙ্গবন্ধু ঘনিষ্ঠ সহচর জনাব রফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার মতো গুনীজনের জন্মস্থান। এই মাটিতে যুগে যুগে সোনার ছেলে জন্ম গ্রহণ করেছে। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চন্ডীপাশা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, অনেক আগেই শত বর্ষ অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে নান্দাইল সরকারী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ ৫০ বছরের কাছাকাছি। স্বাধীনের পর থেকে এ পর্যন্ত নান্দাইলের উন্নয়নে প্রতিটি জনপ্রতিনিধির অবদান কম বেশী আছে । তবে বর্তমান মাননীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান ( তুহিন) সাহেব, নান্দাইলের উন্নয়নে, রাজনৈতিতে, জন সম্পৃক্ততায়, অভাবানীয় পরির্বতন এনেছেন। তাঁহার উন্নয়নের ছোঁয়ায় নান্দাইলের প্রতিটি নাগরিক মুগ্ধ ও প্রশংসামুখর।
কিন্তু নান্দাইলে সবার আগে দরকার শিক্ষার উন্নতি। নান্দাইলের এসএসসির ফলাফল দেখলে মনে হয় অভিভাবকহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অথবা শিক্ষকরা শিক্ষার বিনিময়ে নরসুন্দার জল নিচ্ছেন। এইচএসসিতে যখন শুনি সারা উপজেলায় একজন জিপিএ ৫ পেয়েছে। উপজেলাবাসী হিসাবে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আমাদের কোন উপায় থাকেনা। আর একমাত্র সরকারী কলেজে পাশের হার ২৭% হয়,তখন সবাইকে নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে মন চায়। একজন নান্দাইলের নাগরিক ক্রোধে ফেবু কমেন্টে বলেছেল ময়মনসিংহে ঈশা খা বাসের ভাড়া ৩০ টাকা পাশের হার এর চেয়ে বেশী আশা করা যায় না। এই ঈশারা ভ্রাম্যমাণ শিক্ষকের দিকে। আমি নান্দাইলের ঐতিহ্যবাহী দুইটা প্রতিষ্ঠানেই পড়ালেখা করেছি। বর্তমানে নান্দাইলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পুরান চাউল ভাতে বাড়তেছে না কিন্তু নতুন চাউল ভাতে বাড়তেছে। নতুন কিছু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা মন্দের ভালো ফলাফলের জলছিটা দিয়া নান্দাইলবাসীর আশাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তারপরও দুইটা প্রতিষ্ঠানের সাথে অন্তরের সেতু বন্ধন আছে আমার। আমাদের সময় নান্দাইলে কোন সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। সেসত্বেও আমাদের পরীক্ষার ফলাফল দেখে ময়মনসিংহ সদরের নামীদামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ঈর্ষান্বিত হইতো। বর্তমানে দুটি সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। চন্ডীপাশা সরকারী স্কুল, এবং নান্দাইল সরকারী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের পরীক্ষার ফলাফল দেখে, আমরা সাবেক ছাত্র হিসাবে শুধু বিব্রত হইনা, আগের মতো বুক ফুলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচয় দিতে দ্বিধাহীন থাকি।
নান্দাইলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের হাত রক্ষা করতে হলে ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক, পরিচালনা কমিটি, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্টা ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসতে হবে। মাননীয় সংসদ সদস্য আপনি গ্রামে / গন্জে উন্নয়নের জোয়ার তুলেছেন। আপনার উন্নয়নকে আরও টেকসই ও গতিশীল করতে হলে শিক্ষার উন্নয়ন অতিজরুরী। তাই নান্দাইলবাসীর বিশ্বাস, ভেঙ্গে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে আপনি পুনঃউদ্ধার করবেন।
আমার মতামত <
# ক্লাসে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের উপস্হিতি নিশ্চিত করতে হবে।
# শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করতে হবে।
# শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে মাদক মুক্ত করতে হবে।
# প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি পরিবর্তন করতে হবে।
# শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে থাকবেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
# ক্লাসে সপ্তাহিক / মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে হবে।
# তিন মাস পর পর অভিভাবক সমাবেশ করতে হবে।
# দুর্বল ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য আলাদা পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
# ক্লাস শুরু হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের সকল গেইট বন্ধ করে দিতে হবে।
Leave a Reply