1. admin@www.gsnnews24.com : admin : সাহিত্য বিভাগ
শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নান্দাইল আসনে ৬জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল মানিকগঞ্জ ২ আসন থেকে টানা তৃতীয় বারের মতো মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন মমতাজ বেগম ঈশ্বরগঞ্জে বালুবোঝাই ট্রাকচাপায় ২ পথচারী নিহত নান্দাইলে ধানবীজ বিতরণে অনিয়ম, মেম্বার একাই করলেন বিশজন কৃষকের স্বাক্ষর ইসি বিধিভঙ্গের অভিযোগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ও সাকিবকে শোকজ তালিকায় আসেনি অনেক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের নাম, উফশী প্রনোদনার বীজধান ও সার প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন নামধারী কৃষকরা বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় পুরো বিশ্ব: ইইউ রাষ্ট্রদূত নান্দাইলে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে অটোরিকসা হারালেন চালক হৃদয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি আওয়ামী লীগে কোন্দল বাড়াবেন? মদনপুর শাহ সুলতানের মাজারে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে অসীম উকিলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু

নিজের স্বামীকে ফিরে পেতে পরপুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, অতঃপর…

  • Update Time : রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯
  • ১৩৯ Time View
প্রতীক ছবি

প্রতীক ছবি

জিএসএন ডেক্স: বিছানার উপরে ঘুমন্ত ছোট ছেলে সন্তান আর মেঝেতে ঘর সংসার ফিরে পেতে মরিয়া অসহায় মা এর নিথর দেহ এই দৃশ্য যে কাউকেই নাড়া দেয়। মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স ২৮/২৯ হবে। ঘরে ১২ বছরের এক ছেলে সন্তান ও ০৮ বছরের এক কন্যা রয়েছে। বছর দুই হল হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে আয়েশার এক যুগের সংসার প্রায় ভেঙ্গে যায়। স্বামী পেশায় ট্রাক ড্রাইভার, দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকে টাংগাইলে। আয়েশা গৃহপরিচারিকার কাজ করে কোন মতে বেঁচে ছিল দুই সন্তানকে নিয়ে। থাকত ভাটারা এলাকার এক নিন্মবিত্ত ভাড়া বাড়ীতে।

স্বামীকে নিজের সংসারে ফেরত পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে আয়েশা। প্রতিবেশী নাজমুল যে পেশায় কিছুদিন আগে পর্যন্ত প্রাইভেট গাড়ীচালক হলেও বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়ী, সে আয়েশার অস্থিরতা সুযোগ নেয়। সুযোগে আয়েশার সাথে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলে। আয়েশাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, এক কবিরাজের ‘বান’ মারার কারনেই তার স্বামী জসিম দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। আর আয়েশাকে ছেড়ে দ্বিতীয় বউ নিয়ে অন্যত্র বসবাস করে, এমনকি নিজের ছেলে মেয়েদের উপরেও নেই কোন টান। এরকম অবস্থা থেকে কিভাবে বাঁচা যায়, কিভাবে ফেরৎ পাওয়া যাবে স্বামীকে, ছেলেমেয়েরা কিভাবে পাবে তাদের বাবার আদর-ভালোবাসা? এই প্রশ্ন গুলোর পেছনের ছুঁটতে গিয়ে হতাশায় সব হারিয়ে ফেলে আয়েশা, এমনকি তার নিজের জীবনও।

এরমধ্যেই ১ জুলাই ২০১৯ আয়েশার স্বামী জসিম উদ্দিন ছোট বউকে সাথে করে টাংগাইল থেকে ঢাকায় এসে তার বোনের বাসায় উঠে। এই খবরটি জেনে আবারও সুযোগ নেয় নাজমুল। আয়েশাকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে কবিরাজের মাধ্যমেই এটি সম্ভব হয়েছে।

ঘটনার দিন (৪ জুলাই ১৯) রাত ১০টার থেকে বিভিন্ন সময় আয়েশা প্রতিবেশী নাজমুলকে অনেকবার ফোন দিতে থাকে। সব শেষ রাত ০১.২৫ মিনিটে আয়েশার সাথে কথা হয় নাজমুলের। কথামত নাজমুল তাড়াতাড়ি আয়েশার বাসায় যায়।  রাত ০১.৩০ মিনিটের দিকে আয়েশার বাসায় ঢুকে। তার রুমে একটি খাট আছে। খাটের উপর ছোট ছেলে ঘুমিয়ে ছিল। এর আগে আয়েশার মেয়ে ঐশী তার বাবার সাথে দেখা করতে ফুফুর বাসায় যায়। আয়েশা’র স্বামীকে বশে আনার উদ্দেশ্যে প্রতারনামূলকভাবে কবিরাজের কথা বলে তার সাথে শারীরিক সর্ম্পক এবং বিভিন্নভাবে আয়েশার কাছ থেকে ২৪০০ টাকা নেয়। এক পর্যায়ে নাজমুলের সাথে আয়েশার অনেক কথা কাটাকাটি হয়। আয়েশা উত্তেজিত গলায় বলে আমার টাকা নিয়েছেন, আমার চরিত্র নষ্ট করেছেন, এখনও আমার স্বামী আসল না, তাহলে আমার টাকা ফেরত দেন নইলে ভাল হবে না। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় নাজমুল।

আয়েশাকে বুঝায় যে, আয়েশাকে তার ছোট সতীন হামিদা “বাঁধা বান ” মেরেছে। তাই কবিরাজ ঔষুধ দিয়েছে আয়েশাকে খেতে হবে। নাজমুলের পকেটে থাকা ঘুমের ঔষুধ মধ্যে ০২টা ঔষুধ পানির বোতলে অল্প একটু পানির মধ্যে গুলিয়ে আয়েশাকে খাইয়ে দেয়। পরক্ষনে সে যখন নাজমুলের সাথে তর্ক করে যে, কিভাবে তার স্বামীকে তার নিজের কাছে ফেরত আনা যাবে তখন নাজমুল তাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, যেহেতু তাকে “বাঁধা বান” মারা হয়েছে তাই তাকে হাত পা বেঁধে নাজমুলের সাথে শারীরিক সর্ম্পক করতে হবে। এটা কবিরাজের নির্দেশ।  নাজমুলের কথা মত আয়েশার হাত-পা বাঁধা হয়। এর মধ্যে ঔষধের ক্রিয়ায় সে অচেতন হয়ে পড়ে। নাজমুল তখন জিআই তার দিয়ে আয়েশার গলায় পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

৫ জুলাই সকাল অনুমান সাড়ে ৭টায় ঐশী বাসায় এসে ঘরের দরজা খোলা পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখে তার মা হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চৌকির পাশে পরে আছে। পরবর্তী সময়ে সংবাদ পেয়ে ছুঁটে আসে আয়েশার ভাই শেখ ফরিদ। এসে দেখে তার বোনের নিথর দেহ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে পরে আছে।

উক্ত ঘটনায় শেখ ফরিদ বাদী হয়ে নিহতের স্বামী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে ৬ জুলাই ভাটারা থানায় হত্যা মামলা করে।

এই হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচনে কাজ শুরু করে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগ। হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে গোয়েন্দাদের নিরলস পরিশ্রম বৃথা যায়নি।

২০ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ১৯.৩৫ ঘটিকায় সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেফতার হয় কথিত কবিরাজ, ধর্ষক ও হত্যাকারী নাজমুল। তাকে নিয়ে পরিচালিত অভিযানে উদ্ধার হয় ঘুমের ঔষধ, জিআই তার ও ভিকটিমের ব্যবহৃত সীম কার্ড, বের হয়ে আসে হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

উক্ত অভিযানটি গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগ এর গুলশান জোনাল টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ গোলাম সাকলায়েন পিপিএম এর নেতৃত্বে  পরিচালিত হয়।

Spread the love

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023
Theme Customized By BreakingNews