ধর্মপাশা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (কাবিটা) সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন সাহেব ও সদস্য সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও জাহাঙ্গীর আলমের সমন্বয়ে ৮৬ টি পিআইসি কমিটি গঠনে তালবাহানা ও সময় ক্ষেপণ করার কারণে সঠিক সময় পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে প্রকৃত কৃষক ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অনেক পিআইসিগণ জানান যে ৮৬ টি পিআইসি কমিটির মধ্যে ৫০% অনিয়ম ও দূর্নীতি দূর্নীতি করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ( কাবিটা) কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন সাহেব ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম। এজন্যই প্রকল্প কমিটি ( পিআইসি) সঠিক সময় কাজ শুরু করতে পারেনি।
গত ১৫ই ডিসেম্বর ধর্মপাশা উপজেলার ফসল রক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্ভোধন করা হয়। তখনো অধিকাংশ ( পিআইসি) তাহারা কাজ পেয়েছেন কিনা জানেনা। গত ৩১শে ডিসেম্বর মঙ্গলবার ধর্মপাশা উপজেলার ধান কুনিয়া ও চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ৪টি প্রকল্প কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পরিদর্শনকালে তার সফরসঙ্গী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র ঘোষ, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মামুন হাওলাদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন ও মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল রায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (কাবিটা) কমিটির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
গত ৩১-১২-২০২৪ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলায় বদলী হয়ে চলে যাওয়ার পর সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ অলিদুজ্জামান ভারপ্রাপ্ত ইউএনও’র দায়িত্ব পালনকালে পিআইসিদের তালিকা প্রকাশ পায়।
২৬শে জানুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে নবাগত ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় দায়িত্ব গ্রহণ করেই পরদিন ২৭শে জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে পিআইসি কমিটির সকল সভাপতি ও সদস্য সচিবদের নিয়ে পরিচিত সভা ও মতবিনিময় সভা করেন।সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পিআইসিদের বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার জন্য তাগেদা প্রদান করেন এবং তাদের প্রশাসনিক সার্বিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় ইতিমধ্যেই সকল প্রকল্প কমিটিকে প্রথম কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। পুরোদমে প্রকল্পের কাজ চলিতেছে।
২রা জানুয়ারি নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় বিভিন্ন হাওর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করে পিআইসিদের নির্ধারিত সময় ২৮শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রাক্কলন মোতাবেক সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ প্রদান করেন।
সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান যে ইতিমধ্যেই ২০-২৫% কাজ হয়েছে। এবং প্রাক্কলন মোতাবেক মাটি পিটানো ও পানি দেওয়ার কথা থাকলেও সকল প্রকল্পের মধ্যে এধরনের কার্যক্রম দেখা যায়নি।সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলুক গ্রামের কৃষক ফজলু মিয়া জানান যে ইউনিয়নের সকল হাওর রক্ষা বাঁধে ২৫-৩০% কাজ করা হয়েছে। ধীরগতিতে কাজ চলার কারণে বাঁধগুলি নির্ধারিত সময় সংস্কার ও পূর্ণনির্মাণ করা সম্ভব হবে না। এতে করে কৃষকগণের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে।জয়শ্রী ইউনিয়নের কৃষক বাহার উদ্দিন জানান প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলার কারণে প্রকল্পগুলি নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন না হলে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ধর্মপাশা উপজেলার ৭টি হাওর তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান তাই কৃষকগণ শঙ্কায় ও দিশেহারা।
ইতিমধ্যেই গত ৩রা ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চারজন সহকারী কমিশনার ও ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল, জয়ধনা, সোনামড়ল, ধানকুনিয়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলি পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, কাজের গতি বাড়িয়ে দিতে হবে ও বাঁধগুলো আরও ভালোভাবে কমপেংশন করতে সকল পিআইসিগণকে নির্দেশনা দিয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (কাবিটা) কমিটির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন যে ইতিমধ্যেই হাওর ফসল রক্ষা বাঁধগুলির ৫০% এর উপরে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই পিআইসিদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধ করা হবে। ভুক্তভোগী কৃষকগণ অনতিবিলম্বে হাওর রক্ষা বাঁধগুলি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply